সিলেট ২১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২০
*অশ্রুঝরা নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাইলেন
*মুরাদকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি
জুনেদ আহমদ :: সিলেটে পুলিশি নির্যাতনে আলোচিত রায়হান হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তাল সিলেট। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি আকবর সহ জড়িতরা। এ বিষয়ে শনিবার সিল নিউজ বিডির সাক্ষাৎকারে আসামীদের গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রায়হানের মা। তিনি আরও বলেন, আকবর যখন আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছিলো তখন লতিফ নামের একজন জালের বেড়া দিয়ে দেখেছিলো এবং হাসান নামের আরেকজন ব্যক্তি নিজের কানে শুনেছে। এতসব প্রমাণ থাকার পরও কেন আসামীকে ধরা হচ্ছেনা। তিনি আরও বলেন, আজ ৮ দিন হয়ে গেলো এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে ধরা হয়নি। যদি কোন সাধারণ মানুষ এই ঘটনা করতো তাহলে এতদিনে গ্রেফতার হয়ে বিচারের আওতায় আনা হত। এমসি কলেজের ধর্ষণ ঘটনার দু’দিনের মাথায় আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্ত আমার ছেলের ঘটনায় এমন কেন? পুলিশ হলে বলে ওদের বিচার হবে না। অশ্রুঝরা নয়নে এসব কথাগুলো বলছিলেন বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হানের মা। মমতাময়ী মা স্বজন হারানোর দুঃখ বুজেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি করছি।
ভিডিও দেখুন-
আকবর ও মুরাদ আমার ছেলেকে নিয়ে নাটক করেছে বললেন রায়হানের মা ।
পলাতক এস আই আকবর ও মুরাদ আমার ছেলের জীবন নিয়ে নাটক করেছে। এই কথাগুলো অশ্রুঝরা নয়নে বলেছিলেরন রায়হানের মা।
Posted by Syl News BD on Friday, 16 October 2020
গ্রিন বাংলার অভিনেতা মুরাদের বিষয়ে বক্তব্যকালে রায়হানের মা বলেন, রোববার ভোর রাত এত বড় ঘটনার পর সোমবার রাতে কিভাবে মুরাদ আকবরের সাথে যোগাযোগ করে। মুরাদ আমার বাসায় আসে এবং আমার নাতিনকে নিয়ে ৩ ঘণ্টা বসে নাটকের মতো অভিনয় করেছিলো আমাদের সাথে। মুরাদ আমাদের সাথে এই নাটক করার কি প্রয়োজন ছিলো? এই যে আকবর-মুরাদ গ্রিন বাংলায় নাটক করতো, সেই নাটক করতে করতে তারা দুজন আমার ছেলের জীবন নিয়ে নাটক করেছে। আকবর মুরাদকে আমরা কি করছি সেটা জানার জন্য। আমি চাই মুরাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক তাহলে চক্রান্তের সব বিষয় জানা যাবে।সিলেটে রায়হানের মৃত্যু ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার একান্ত ঘনিষ্ঠজন নগরীর শেখঘাট কলাপাড়ার বাসিন্দা নাঠ্যকার ও শিবির ক্যাডার বেলাল আহমদ মুরাদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তোলপাড় শুরু হয়েছে। কে সেই মুরাদ ২০০৫ সালে এসএসসি পাশের পরপরই জীবিকার তাগিদে সিলেট সাব রেজিস্টার অফিসে নকলনবিশ হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। সেই সাথে জামাতের সংগঠন ‘দিশারী’তে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। নগরীর শেখঘাট কলাপাড়ার এক মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে ছিলেন মুরাদ। সাব রেজিস্টার অফিসে চাকরি করে বনে যান আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। অল্প দিনে হয়ে যান তিনি অনেক সম্পদের মালিক। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে চলে যায় চাকরি। তবে বন্ধ হয়নি রেজিস্টার অফিসে ভূমির দালালী। ছাত্র জীবন থেকে শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন মুরাদ। শিবিরের মামলা ও ২০১৩ সালে সিলেটে জগত জ্যোতি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল বেলাল আহমদ মুরাদ। শিবির ক্যাডার মুরাদ তার মিশন বাস্তবায়ন করতে এসআই আকবরকে নাটকে যোগদান করান। আকবরকে নিয়েই ‘গ্রিন বাংলা’য় ধারাবাহিক নাটকের কাজ শুরু করেন মুরাদ। অথচ আকবর সিলেটী ভাষায় কথা বলতে পারেননি। তবুও কেন তাকে নাটকে যোগদান করা হলো এ নিয়ে প্রশ্ন সিলেটের সচেতন মহলের। নাটকের সুবাধে তারা দুজনের মিশন ছিলো খুন ও হত্যার মধ্য দিয়ে সরকারকে বিতর্কিত করা এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা। সিলেটসহ সারাদেশে মুরাদ-আকবরের গোপন মিশন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকই আকবরের সাথে মুরাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। শিবির ক্যাডার মুরাদকে গ্রেফতার করলে বেরিয়ে আসবে রায়হান হত্যা সহ তাদের গোপন মিশনের অজানা অনেক তথ্য। এদিকে, সিলেটের দিনকাল ও সিল-নিউজ বিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর শিবিরের পাশাপাশি সাংবাদিক নামধারী একটি মহল আকবরের সহযোগী মুরাদকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে দৌড়-ঝাপ শুরু হয়েছে তাদের। বড় অংকের টাকার বিনিময়ে মুরাদকে বাঁচাতে তার পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করাও হচ্ছে। তাদের দালালীতে হয়তো রায়হান হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে চলে যাবে, আর রক্ষা পাবে আসল অপরাধীরা। এমনটাই দাবি করছেন সিলেটের সচেতন মহল। মুরাদ জগত জ্যোতি হত্যা মামলায় জেল খেটেছিল, সংবাদপত্রে শিরোনামও হয়েছিলো। তারপরও চার্জশিটে নাম বাদ গেলো কোন অদৃশ্য শক্তির হস্তক্ষেপে। এমনটা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শিবির ক্যাডার বেলাল আহমদ মুরাদকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন নিহত রায়হানে মা। এদিকে, শুক্রবার ‘সিল নিউজ বিডি’র এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, সিলেট নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ি। এই ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন আকবর ও তার সহযোগীরা। এমন খবর পেয়ে আমরা সাথে সাথে প্রতিবাদে নেমেছি। ঘটনার পরই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। এরপর জড়িতদের প্রত্যাহার ও বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নাই। তবে গ্রেফতারের আগেই আকবর পলাতক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এমসি কলেজের পরপরই এই ঘটনা। এটা কোন সাধারণ ঘটনা নয়, এটা একটি পরিকল্পিত ঘটনা। নায়ক আকবরের সাথে মুরাদকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং মুরাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে এর পিছনে কারা জড়িত। আকবর নাট্যজগতে কি ভাবে আসলো। সব কিছু খতিয়ে দেখতে হবে। আকবরকে নায়ক সাজিয়ে সিলেট উত্তপ্ত করা হয়েছে। কারা এর পিছনে রয়েছে সেজন্য মুরাদকে জিজ্ঞাসাদ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনে আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করেছেন। কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হয়নি।সিলেটের সাবেক শিবির নেতা বেলাল আহমদ মুরাদ এর সাথে বিএনপি নেতার ছেলে এসআই আকবরের গভীর সম্পর্ক ছিলো সর্ব মহলের জানা। সেই সুবাধে তারা দুজনের মিশন ছিলো খুন ও হত্যার মধ্য দিয়ে সরকারকে বিতর্কিত করা এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা।উল্লেখ্য, গত রোববার ভোররাতে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ছিনতাইকারী সন্দেহে আটক রায়হান। এ অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রোববার থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়। তদন্ত ভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। গত বৃহস্পতিবার মরদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়।রায়হান হত্যার ঘটনায় এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। প্রতিদিন সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন এবং রাস্তা অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি