মৌলভীবাজার ‘এক খন্ড স্বর্গ’ হলেও পর্যটন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় কমছে পর্যটক

প্রকাশিত: ১০:১০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

মৌলভীবাজার ‘এক খন্ড স্বর্গ’ হলেও পর্যটন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় কমছে পর্যটক

মৌলভীবাজার ‘এক খন্ড স্বর্গ’ হলেও পর্যটন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় কমছে পর্যটক

স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :: পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময়, রুপ বৈচিত্রে পরিপূর্ণ মৌলভীবাজার। জেলার প্রতিটি উপজেলায় একদিকে নয়নাভিরাম সবুজ গালিচার মতো বিছানো চা বাগান, বিশাল হাকালুকি হাওর, বেশ কয়েকটি নৈস্বর্গিক পাহাড়ি ঝর্ণা। আঁকাবাঁকা পাহাড়-টিলায় সবুজ বৃক্ষরাজি, পিচ ঢালা আকাবাঁকা সড়ক ওপরে দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ। পাহাড়ের চূড়া থেকে নিসৃত ঝরণাধারা, নদ-নদী, খাল-বিল আর হাইল-হাওরের নীল জলরাশি। চা বাগানের ছোট-বড় হ্রদ, গ্যাসকূপ, লেবু, আনারস, পান আর আগর বাগান। জেলার সাতটি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনধারা। রয়েছে তাদের আলাদা আলাদা ধর্ম, সংস্কৃতি ও উৎসব পার্বন।

কানাডিয়ান ফ্রিল্যান্স লেখক এন্টনি ও ডেন্টাল এখানকার প্রকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মৌলভীবাজারকে ‘এক খন্ড স্বর্গ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। একসময় প্রকৃতির এই নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখতে এখানে পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকত। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই, বর্তমানে পর্যটকশূন্য এই জেলা। দিনে কিছু পর্যটক এলেও রাতে থাকছেন না। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই খাতে বিনিয়োগকারীরা। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এর জন্য সরকারের পর্যটন শিল্পের বিকাশ নিয়ে কর্মকৌশল বাস্তবায়ন না হওয়াকে দায়ী করছেন।

সূত্র জানায়, পর্যটকের খড়া কাটিয়ে উঠতে ২০১৭ সালে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করে একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও এর বাস্তবায়ন হয়নি। তা রয়ে গেছে কেবল কাগজে-কলমে।

এছাড়া ২০২২ সালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভার সিদ্ধান্তগুলোও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ২০০৮ সালে এ জেলাকে পর্যটন জেলা ঘোষণা করা হলেও আজও গেজেট হয়নি। জানা যায়, গত পাঁচ বছরে পর্যটকনির্ভর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হিলভিউ গেস্ট হাউস, তানভীর গেস্ট হাউস, ব্লোবেল গেস্ট হাউস, হামিদা গেস্ট হাউস, মুন ড্রিম রেস্ট হাউস, শ্রীমঙ্গল রেস্ট হাউস ও শান্তনীড় রেস্ট হাউস বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে এসকেডি আমার বাড়ি রিসোর্ট।

আমার বাড়ি রিসোর্টের মালিক সজল দাশ বলেন, পর্যটক কম আসায় প্রতি মাসেই ক্ষতি হচ্ছে। তাই রিসোর্ট ভাড়া দিয়ে দিয়েছি।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আহমেদ বলেন, ‘পর্যটক কমছে এটা সত্য। তবে এর কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। দিনদিন পর্যটক কম আসায় এ শিল্প এখন ধ্বংসের মুখে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ব্যয় বহুল হোটেলগুলো। কাজ হারাচ্ছেন হাজার হাজার পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মচারী।’

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘২০১৭ সালের কর্ম পরিকল্পনা ধরে আমরা এগোচ্ছি। পর্যটন স্পটগুলোকে কীভাবে আরও পর্যটক আকৃষ্ট করা যায় সে চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।’

 

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ