সিলেট ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৩
ফকির লালনের তিরোধান দিবস কাল
অনলাইন ডেস্ক
আধ্যাতিক সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৩ তম তিরোধান দিবস মঙ্গলবার। এ উপলক্ষে সাধুর হাট বসছে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়, লালনের আখড়াবাড়িতে। এ সাধুসঙ্গে সাধু-বাউল-ফকিররা যোগ দিচ্ছেন। আর মিলন মেলায় যুক্ত হচ্ছেন পর্যটক দর্শনার্থীরা। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে গুরু-শিষ্যের সাধন-ভজন ও ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন। ‘অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী, অহিংস’ লালন দর্শনের গানে মুখর এখন ছেউড়িয়া এলাকা। আখড়াবাড়ির বাইরে বসছে তিনদিনের লালন মেলা। উৎসব চলবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত।
প্রবীণ সাধু নহির শাহ, হালের হৃদয় শাহসহ অনেক সাধু-ফকিরই এরইমধ্যে আখড়াবাড়ির ভেতরে অডিটোরিয়ামের নিচে আসন পেতে বসেছেন। নহির শাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রায় দু’শো বছর আগে ফকির লালন সাঁই এই ছেউড়িয়ায় দোল পূর্ণিমার তীথিতে সাধুসঙ্গ করতেন। গানে গানে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছড়িয়ে দিতেন। সেই রেওয়াজ মোতাবেক অধিবাস, বাল্যসেবা ও পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে এখনো এই দোল উৎসব হয়। পাশাপাশি ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক লালন সাঁইজির দেহত্যাগের পর থেকে যুক্ত হয়েছে আরেকটি অনুষ্ঠান। দৌল উৎসবের আদলে ১৩৩ বছর ধরে তিরোধান উৎসবেও সাধু-বাউলরা লালনকে স্মরণ করছেন। নহির শাহ বলেন, পয়লা কার্তিক ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় সব সাধু-গুরু আসন নিয়ে চা-মুড়ির সেবার মধ্যদিয়ে তিরোধানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সন্ধ্যার এই আয়োজনকে বলা হয় অধিবাস। এটি দৈন্য দিয়ে শুরু হয়, সঙ্গে সাঁইজির নাম-কালাম ধরে প্রার্থনামূলক পদ-পদাবলী গান চলতে থাকবে। পরদিন ১৮ অক্টোবর সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পূর্ণসেবার মধ্যদিয়ে সাধুসঙ্গের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এরপর কিছু সাধু চলে যাবেন। তবে উৎসব যেহেতু আরো একদিন থাকছে সেই হিসেবে থেকে যাবেন অনেকেই। তিনি বলেন, এখানে সাধু-গুরুর ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে চরিত্র গঠন হয়। সবাইকে সত্যবাদী, জিহাদী, কষ্টসহিঞ্চু ও অল্পতেই তুষ্ট থাকার মতো চরিত্রবান হতে হবে।
বিশাল আখড়াবাড়ি ও বাইরের খোলা মাঠে সাধু-বাউলরা বৈঠকি ঢঙে বসেছেন। একএকটি বৈঠক থেকে গানে গানে লালনের বাণী প্রচার করা হচ্ছে। আর ফকির লালন সাঁইজি ও তার শিষ্যরা চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে প্রথা অনুযায়ী সেখানে ভক্তি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন ভক্ত-অনুসারীরা। গুরু-শিষ্যের মিলন হলে দেখা মিলছে হাতে হাত রাখার অপূর্ব দৃশ্য। লালনের গুরুবাদী মানব ধর্মে মানুষ ভজতে বলা হয়েছে।
ফকির হৃদয় শাহ বলেন, এই পূণ্যধামে যতো আয়োজন আছে তার মধ্যে সাধুসঙ্গই বড় বিষয়। সূচনা হবে পয়লা কার্তিক সন্ধ্যার গুরুকাজ দিয়ে। এর অষ্টপ্রহর পর পূর্ণ সেবা দিয়ে এটি শেষ হবে। এই সময়টিতে লালনের বাণী, তার আকুতি, স্রষ্টার সঙ্গে মেলবন্ধন ও সাধুর আবেশ নিয়ে যে সঙ্গটি হয় এটি বরাবরই দেখতে একই রকম। কিন্তু এরমধ্যেও ভিন্নতা তৈরি হয় কতটুকু শিখতে পারলাম এবং ধরে রাখতে পারলাম তার মধ্য দিয়ে। হৃদয় শাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি মনে করি প্রতিবারের এই অষ্টপ্রহর জীবনের সেরা সময় পার করি।
এদিকে, সোমবার বেলা ১১টায় লালন একাডেমিতে তিরোধান দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা কোর কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠক থেকে বের হয়ে একাডেমির সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, উৎসবের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে যারা আসছেন এখানে তারা সব ধরণের নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। বাউল-ফকিরদের খাবার ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন সামনে তাই এই উৎসব নিয়ে বেশি তৎপর আমরা। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি