কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনারে যুক্তরাজ্যের সেরাদের সম্মাননা

প্রকাশিত: ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২৩

কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনারে যুক্তরাজ্যের সেরাদের সম্মাননা

কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনারে যুক্তরাজ্যের সেরাদের সম্মাননা

অনলাইন ডেস্ক

বরাবরের মত চোখ ধাঁধানো নান্দনিক আয়োজনে যুক্তরাজ্যের বাছাই করা সেরা শেফ ও রেস্টুরেটার্সদের হাতে অ্যাওয়ার্ডস তুলে দিয়েছে কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপ। গতকাল রবিবার (১৫ অক্টোবর) সেন্ট্রাল লন্ডনের অভিজাত লন্ডন ম্যারিয়োট হোটেলের সুপরিসর ‘ওয়েস্টমিন্সটার বল রুম’-এ অনুষ্ঠিত হয় কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনার ২০২৩। পাঁচটি বিভাগে মোট ৪৪টি অ্যাওয়ার্ডস প্রদান করা হয়।

এরমধ্যে রয়েছে, কারি লাইফ এডিটর চয়েস রেস্টুরেন্টস অ্যাওয়ার্ডস, কারি লাইফ বেস্ট রেস্টুরেন্ট অ্যাওয়ার্ডস, কারি লাইফ বেস্ট শেফ অব দ্য ইয়ার, বেস্ট টেকওয়ে অব দ্য ইয়ার এবং কারি লাইফ রেকমেন্ডেড রেস্টুরেন্ট-২০২৩। এটি ছিলো ‘কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনার’ এর ১৪ তম আয়োজন। কারি ইন্ড্রাস্ট্রির অর্জন, সম্ভাবনা ও সংকট নিয়ে নিয়মিত প্রকাশনা ও বিভিন্ন দেশে ‘ব্রিটিশ কারি ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজনের মাধ্যমে কারি লাইফ ইতিমধ্যে ব্রিটিশকারি ইন্ডাস্ট্রির বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মূখপাত্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যের কালিনারি ক্যালেন্ডারের বার্ষিক অন্যতম সেরা আয়োজন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ‘কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডস’।
যুক্তরাজ্যে কারি ইন্ডাস্ট্রির প্রেসটিজিয়াস এই অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে এবারও রেস্টুরেটার্স ও খাদ্যরসিকদের উপস্থিতি ছিলো দেখার মত। ৫ শতাধিক অতিথির এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের স্বনামধন্যরা। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তথেকে আসেন কারি ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, রেস্টুরেন্ট মালিক ও শেফরা।স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে চারটা থেকেই শুরু হয় অতিথিদের আগমন। সন্ধ্যা ৬টা হতেই অতিথিদের জমজমাট উপস্থিতিতে ভরে উঠে অনুষ্ঠানস্থল।রকমারি ও সুস্বাধু ক্যানোপির সাথে চলে অতিথিদের ছবি তোলা ও আড্ডা।সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় মূল আয়োজন। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বছরে প্রায় ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের অবদান রাখে কারি ইন্ডাস্ট্রি। বিশাল এই রেস্টুরেন্ট সেক্টরের সেরাদের সম্মাননা জানানোর অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিজ (সিবিআই) এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, হাউজ অব লর্ডসের সদস্য লর্ড করণ বিলিমোরিয়া। লণ্ডন বিষয়ক উপ-মন্ত্রী এবং টেক ও ডিজিটাল ইকোনোমি বিষয়ক পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি পল স্কালি এমপি। ওয়ার্থিং ওয়েস্টের এমপি ফাদার অব দ্য হাউস অব কমন্স স্যার পিটার বোটোমলি, সেন্ট অস্টেল অ্যান্ড নিউ কি আসনের এমপি, জুনিয়র লর্ড কমিশনার স্টিভ ডাবল এবং শ্যাডো ইনভেস্টমেন্ট ও স্মল বিজনেস মন্ত্রী, বেথনাল গ্রীন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী।স্যার বটমলি ও ষ্টিভ ডাবল এমপি তাদের এলাকার দুটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ব্যবসাকে সমর্থন জানানোর জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানটি চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেন মূলধারার টিভি আইটিভির নিউজ রিডার লুকরেসিয়া মিলারিনি।

মঞ্চের আয়োজনের শুরুতে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কারি লাইফ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা। কারি লাইফ অ্যাওয়ার্ডসের ১৪তম আয়োজনটি একটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ।চলতি বছর কারি লাইফ ম্যাগাজিন প্রকাশনার ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি এবং তার ভাই সৈয়দ বেলাল আহমদ ১৯৭০ এর দশকে যুক্তরাজ্যে আসার পর কারির প্রতি ব্রিটিশদের আগ্রহের মাত্রা দেখে অবাক হয়েছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে কারির এই নতুন আবাস খুঁজে পাওয়ার বিষয়টিকে তারা উদযাপন ও সামনে এগিয়ে নেয়ার আকাঙ্খা থেকে দুই ভাই মিলে ২০ বছর আগে কারিলাইফ ম্যাগাজিন শুরু করেন। এরপর ২০০৯ সালে শুরু করেন ‘কারি লাইফ এওয়ার্ডস’। তিনি বলেন, এখন ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ব্রিটিশ কারির কদর করেন।কারণ ব্রিটিশ কারি একটি স্বতন্ত্র স্বাদ ও বৈশিষ্ট অর্জন করেছে এবং এর বৈচিত্র অব্যাহত ভাবে বিকশিত হচ্ছে।

রেস্টুরেন্ট সেক্টরের নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, রেস্টুরেন্ট সেক্টরের ন্যায্য দাবির পক্ষে কারি লাইফ টিম অব্যাহতভাবে ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাবে।

কোবরা বিয়ারের স্বত্তাধিকারী করণ বিলিমোরিয়া বলেন, করোনার ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেনযুদ্ধ। ফলে শুরু হয় মূল্যস্ফীতির চাপ। এর উপর আছে কর্মী সংকট। কিন্তু এত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের কারি সেক্টর। তিনি বলেন, রেস্টুরেন্ট পরিচালনা কেবল একটি ব্যবসা নয়, এটি নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাহণ। আবার অনেকর কাছে এটি পারিবারিক ঐতিহ্য। তিনি রেস্টুরেন্টগুলোর বিজনেস রেট কমানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। লর্ড বিলি মোরিয়া বলেন, ব্রিটেনের অর্থনীতি ষষ্ঠ অবস্থানে হতোনা ইমিগ্র্যান্টদের অবদান ছাড়া। তিনি ইমিগ্রেশনের সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। রেস্টুরেন্ট ও হসপিটালিটি সেক্টরসহ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মী সংকটের দিকে নজর দেয়ারও আহবান জানান তিনি।

ব্রিটিশ কারি ইন্ড্রাস্ট্রির মূখপত্র হিসেবে ‘কারি লাইফ ম্যাগাজিনের বিশেষ ভূমিকার প্রশংসা করে করণ বিলিমোরিয়া বলেন, তাদের কল্যাণে এখন ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশে ‘ব্রিটিশকারি ফ্যাস্টিভেল’ হচ্ছে। ব্রিটিশ কারির বৈচিত্রের কথা তারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন।বিষয়টিকে অত্যন্ত চমৎকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত বছরের শেষদিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘ব্রিটিশ কারি ফ্যাস্টিভাল’ উপলক্ষে কারি লাইফ টিমের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন বিলিমোরিয়া। তিনি বলেন, নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

লণ্ডন বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং টেক ও ডিজিটাল ইকোনোমি বিষয়ক পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি পল স্কালি এমপি বলেন, হসপিটালিটি বিষয়ক সমস্যা সমাধানের জন্য কভিডকালীন সময়ে হসপিটালিটি কাউন্সিল চালু করা হয়। এখন সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও এর প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা হয়। এটাই সমস্যা সমাধানে সমানে এগিয়ে যাওয়ার পথ এবং আমাদের মিলে মিশে কাজ করতে হাবে। তিনি ইন্ডাস্ট্রির উদ্বেগের বিষয় যাতে সরকার শুনে সেটা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান স্পন্সর ‘জাস্ট ইট’এর প্রতিনিধি মাট হপার বলেন, মূল্যস্ফীতিসহ জীবিকা নির্বাহেরএই কঠিন সময়ে রেস্টুরেন্টগুলো বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাই ‘জাস্ট ইট’ রেস্টুরেন্ট সেক্টরের বিজনেস রেট অন্তত কয়েক বছরের জন্য ফ্রিজ রাখতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে অব্যাহতভাবে ক্যাম্পেইন করছে।

কারিলাইফ ম্যাগাজিনের এবারের আয়োজনও ছিলো নতুনত্বে ভরা। নজরকাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজনের পাশাপাশি ছিলো সুস্বাদু নানা পদের খাবার। অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের মঞ্চে নেয়া হয় বিশেষ মর্যাদায়। আবার পুরো অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

এবারের আয়োজনে হেডলাইন স্পন্সর ছিলো কাস্টোমারের কাছে রেস্টুরেন্টের খাবার পৌঁছে দেয়ার সেবা প্রদানকারী বড় প্রতিষ্ঠান ‘জাস্ট ইট। আরো সহযোগিতায় ছিলো ইউনিসফট, ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউড, কোবরা বিয়ার ও ট্রাভেল লিংক।

বিডি-প্রতিদিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ