তিনটি নৃ-গোষ্ঠেীর উৎসবকে নিয়ে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে উৎসবের আমেজ

প্রকাশিত: ৫:৫২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২৩

তিনটি নৃ-গোষ্ঠেীর উৎসবকে নিয়ে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে উৎসবের আমেজ

তিনটি নৃ-গোষ্ঠেীর উৎসবকে নিয়ে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে উৎসবের আমেজ

 

স্বপন দেব, নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের সমতল ও উঁচু–নিচু টিলায় বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। বছরের নানা সময়ে ভিন্ন ভিন্ন আচারঅনুষ্ঠান পালন করেন তারা। তবে তাদের প্রধান প্রধান উৎসবগুলো হয়ে থাকে শীতকালে।
সেই সব উৎসব নিয়ে চলছে বিভিন্ন পাড়ার ঘরে ঘরে নানা প্রস্তুতি। নভেম্বর মাসে মণিপুরিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব মহারাস লীলা, গারো, খাসি (খাসিয়া) পৃথক বড় তিনটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই উৎসবগুলো দেখতে ভিড় করেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন ধর্মের লোকজন ও পর্যটকেরা।
নিজস্ব ভাষা, বর্ণমালা, সাহিত্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে থাকা মণিপুরিদের প্রধান উৎসব মহারাসলীলা। ২৭ নভেম্বর কমলগঞ্জের মাধবপুরের শিববাজারে (জোড়া মন্ডপে) ও আদমপুরের তেতইগাঁওয়ে আয়োজন করা হয়েছে এই উৎসবের। রাস উৎসবের দুটি পর্ব থাকে। দিনের বেলায় রাখাল নৃত্য আর রাতে মহারাস। রাখালনৃত্যে শ্রীকৃষ্ণের শিশুকালের নানা লীলা তুলে ধরা হয়। রাতের বেলা শুরু হয় মহারাসলীলা। ভোর পর্যন্ত রাধাকৃষ্ণের অপ্রাকৃত স্বর্গীয় প্রেম কাহিনি ফুটিয়ে তুলেন মণিপুরিরা।
খাসি (খাসিয়া) জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব খাসি সেং কুটস্নেম। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা পুরোনো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার খাসিয়া জনগোষ্ঠীর এই ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জির মাঠে দিনব্যাপী এই উৎসব হবে।
উৎসব উপলক্ষে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মেলায় আদিবাসী খাসি জনগোষ্ঠীর মানুষ বসবেন বাহারি পণ্যের পসরা নিয়ে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পান সুপারি, তির, ধনুকসহ বাঁশ-বেতের জিনিসপত্র থাকবে। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য গান, খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগীতার আয়োজন। সিলেট বিভাগের ৭৫ টি পুঞ্জি থেকে এখানে এসে লোকজন উৎসবে যোগ দেবেন।

অপরদিকে, গারোদের অন্যতম বড় উৎসব ওয়ানগালা। সাধারণত শীতের শুরুতে নতুন ফসল ঘরে তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। গারো ভাষায় ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ শব্দের অর্থ উৎসর্গ করা। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে গারোরা তাদের দেবতার কাছে ফসল উৎসর্গ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ১৯ নভেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুলছড়ি গারোপল্লির মাঠে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
কমলগঞ্জের সংবাদ কর্মী ও সামাজিক সংগঠক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ক তাজুল ইসলাম জাবেদ বলেন, একটা সময় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই উৎসবগুলো তাঁদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন এই উৎসবগুলোয় সবাই অংশ নেন।
বিশেষ করে কমলগঞ্জের মণিপুরিদের মহারাস উৎসব দেখতে মণিপুরি জনগোষ্ঠীর বাইরের লোকজন বেশি থাকেন। সারা দেশ থেকে এখানে মানুষ আসেন। অন্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানেও বাইরের মানুষ আসেন। তাঁদের এসব উৎসব যেন হারিয়ে না যায়, সে জন্য জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনেও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উৎসব করা হয়।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ