সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-আইজিপির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-আইজিপির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (ডানে)

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-আইজিপির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ

 

অনলাইন ডেস্ক

 

সরকার পতনের আন্দোলনে নৌবাহিনী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজের (১৬) মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আইনজীবীর মাধ্যমে গতকাল মঙ্গলবার এই অভিযোগ দেন গোলাম নাফিজের বাবা মো. গোলাম রহমান। আজ বুধবার গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য দেন। অভিযোগ আনা চার পুলিশ কর্মকর্তা হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ও তেজগাঁও থানার তখনকার ওসি মোহাম্মদ মহসীন।
এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ সদস্য, স্থানীয় কমিশনার, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪০-৫০ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) অভিযোগটি দেওয়ার পর তা কমপ্লেন্ট রেজিস্ট্রিভুক্ত করা হয়। সব মিলিয়ে তদন্ত সংস্থা ১১টি অভিযোগ কমপ্লেন্ট রেজিস্ট্রিভুক্ত করেছে। ১০টি অভিযোগ কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনকেন্দ্রিক।

একটি অভিযোগ ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকেন্দ্রিক। ১০টি অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।’
অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখনো ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়নি। প্রসিকিউশনও পুনর্গঠন করতে হবে। তদন্ত সংস্থায় পুনর্গঠনের কাজ চলছে। ফলে আপাতত আমরা অভিযোগসংক্রান্ত নথি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করছি। পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন হলেই মাঠ পর্যায়ে তদন্তে নামবে তদন্ত সংস্থা।’

গোলাম রহমানের অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে গত ৪ আগস্ট সকাল ১১টায় গোলাম নাফিজ বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর বিকেল ৩টায় নাফিজ তার মার সঙ্গে ফোনে কথা বলে। এরপর পর আর নাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় নাফিজকে খুঁজতে বেন হন গোলাম রহমান। কিন্তু ফার্মগেট এলাকায় আন্দালনকারীদের ওপর পুলিশকে গুলি করতে দেখে বিভিন্ন হাসপাতালে ছেলেন খোঁজ করতে থাকেন। এদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদনে দেখতে পান, একটি রিকশায় গুলিবিদ্ধ নাফিজের নিথর দেহ পড়ে আছে এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে ঘিরে আছেন। পরে বিভিন্ন পত্রিকা এ ছবি প্রকাশ করে। পরে রাত ৩টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন গোলাম রহমান।

অভিযোগে তিনি বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর একজন রিকশাচালক আমার সন্তানকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দেশব্যাপী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অংশ হিসেবে আমার সন্তানকে হত্যা করে।’

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ভূমিকা নিয়ে আভিযোগে বলা হয়েছে, তার নির্দেশ, অন্যান্য আসামির অনুমোদন ও সক্রিয় অংশগ্রহণে সুপরিকল্পিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে।

গোলাম রহমান অভিযোগে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে এক হাজার মৃতের সংখ্যা উল্লেখ করেছেন। যাতে প্রমাণ হয় আমার ছেলে নাফিজের হত্যা একটি সুপরিকল্পিত গণহত্যার অংশ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২), ৩(২)(এ), (গ), (জ) ও ৪(১) (২) ধারার অভিযোগের পক্ষে নিহত গোলাম নাফিজের বন্ধু, মামাসহ পাঁচজনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারী গোলাম রহমান।

বিডি-প্রতিদিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
      1
16171819202122
23242526272829
30      
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ