ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে : শফিকুল আলম

প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৪

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে : শফিকুল আলম

বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম

 

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে : শফিকুল আলম

অনলাইন ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টি, রিপাবলিকান পার্টি সবার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক আছে। তাদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার ভালো বন্ধুত্ব আছে। আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অধ্যাপক ইউনূস শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও গভীর হবে।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় উপ প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘বিবিসি, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। আমরা স্বাগত জানিয়েছি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার আগে থেকেই সুসম্পর্ক রয়েছে। এবার গণবিপ্লবের পর এটা আরো ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চায় বিশ্বের সকল দেশে গণতন্ত্র বজায় থাকুক। ওরা দেখছে আগের ১৫ বছর বাংলাদেশে যে ডিক্টেটরশিপ ছিল, সেখান থেকে বর্তমান সরকার দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পথে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা আশা করছি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আরো উচ্চ শিখরে যাবে।’

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন টুইট করেছিলেন তখন উনি ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। উনাকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। এখন যখন উনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তখন নিশ্চয়ই দেখবেন প্রকৃত ঘটনাটা কী। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমান সরকার আসলে কী চাইছে? তারা দেশটাকে একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিতে চাইছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চয়ই চাইবেন সারা পৃথিবীতে গণতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ুক। এজন্য আমাদের সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলে আমরা মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিয়ে অনেক ভুল তথ্য, অপতথ্য আছে। বাংলাদেশের ৯ জন হিন্দুর মৃত্যু নিয়ে যে রিপোর্ট হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে কোনোটি রাজনৈতিক কারণে, কোনোটি ব্যক্তিগত কারণে। ধর্মীয় কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা গণমাধ্যমের কাছে আবেদন জানাবো দায়িত্বশীলতার সঙ্গে রিপোর্ট করার জন্য। কারণ, আমাদের রিপোর্টগুলো নিয়ে নানা ধরনের ক্যাম্পেইন হয়। যেটা সত্য আমরা চাই সেটা ফুটে উঠুক। অসত্যকে যেন ছড়িয়ে দেওয়া না হয়।’

সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্যোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘এই সরকার সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা প্রদানে বদ্ধপরিকর। দুর্গাপূজার সময় সংখ্যালঘু নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু দুর্গাপূজা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অ্যাপের মাধ্যমে সবগুলো পূজামণ্ডপ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।’

শিক্ষাখাত সংস্কারে কমিশন করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের বড় খাত শিক্ষা। এটা নিয়ে কাজ হবে। তবে কমিশন কবে নাগাদ হবে এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

এ সময় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামীর পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলা সংবাদ মাধ্যম ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীনের টকশোতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতিকে দাওয়াত দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তিনি দেশের বাইরে থেকে এ অনুষ্ঠান করছেন। তিনি দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করছেন কি না এই আত্মজিজ্ঞাসা তিনি করবেন বলে আশা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিভিন্ন বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই। আবু সাঈদের বীরত্বের কথা জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলির ভাষণে বলার জন্য তারা প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছিলেন। একইসঙ্গে তারা আবু সাঈদের নামে একটা ফাউন্ডেশন করতে চান, এজন্য তারা প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেছেন। আবু সাঈদের নামে একটি মেডিকেল কলেজ ও একটি মডেল মসজিদ করতে চান তারা।’

এছাড়া বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটা দল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে এই সরকারের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট আসছেন জানুয়ারিতে। অনেকগুলো ট্রেড, বিনিয়োগ নিয়ে কথা হবে। তারা দুর্নীতি দমন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে শিফট্ করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে সহযোগিতা করতে চান। এর বাইরে বুধবার ব্রাজিলের অ্যাম্বাসেডর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘তারাও আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা তাদেরকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চায়।’

বিডি প্রতিদিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ