তিন স্থলবন্দরে অচলাবস্থা

প্রকাশিত: ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪

তিন স্থলবন্দরে অচলাবস্থা

ভারতীয়দের বাধায় দুই সীমান্ত দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ
তিন স্থলবন্দরে অচলাবস্থা
জটিলতা নিরসনে উভয় দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা

অনলাইন ডেস্ক

 

সিলেটের তিনটি স্টেশন দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এতে তিনটি স্টেশনেই দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। সীমান্তের দুই পাড়ে আটকা পড়েছে কয়েক শ পণ্যবাহী ট্রাক। ভারতীয়দের বাধার মুখে শেওলা স্থলবন্দর ও জকিগঞ্জ শুল্কস্টেশন দিয়ে বন্ধ রয়েছে পণ্য আমদানি-রপ্তানি। অন্যদিকে, শুল্কায়ন জটিলতায় তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। জটিলতা নিরসনে উভয় দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

আমদানিকারক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত অভিযোগ ও ইসকন থেকে বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গত রবিবার ভারতের করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশনে মিছিল নিয়ে জড়ো হন কয়েক শ লোক। তারা সীমান্ত এলাকায় বিক্ষোভ করেন। পরে ভারতীয় বিক্ষোভকারীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সুতারকান্দি শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ভারতের করিমগঞ্জ শুল্ক স্টেশনে। ফলে রবিবার থেকে ওই স্টেশন দিয়েও আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়।

এদিকে, পণ্য পরিমাপ সংক্রান্ত জটিলতায় একই দিন থেকে ভারতের ডাউকি বর্ডার দিয়ে পাথর-চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালক এবং পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আতিক হোসেন জানান, ইসকন ইস্যুতে ভারতের সুতারকান্দি ও করিমগঞ্জ বর্ডার দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় লোকজনের বাধার মুখে ভারত থেকে বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে পারছে না।

তিনি জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ভারতের সুতারকান্দিতে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী অন্তত ২০০ ট্রাক এবং এপারে শেওলা শুল্ক স্টেশনে অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে। এ ছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জের ওপারে ভারতের করিমগঞ্জে আটকা পড়েছে ফল ও কাঁচামালবোঝাই অর্ধশতাধিক ট্রাক। পণ্য খালাস না হওয়ায় ট্রাকে ফলসহ কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আতিক হোসেন আরও জানান, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে পণ্য পরিমাপ নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, সিলেটের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যে পাথর আমদানি করা হয়, তা সরাসরি খনি থেকে ট্রাকে লোড করা হয়। ফলে পাথরের সঙ্গে মাটি ও বালি মিশ্রিত থাকে। আগে শুল্কায়নের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালির ওজন বাদ দিয়ে পাথরের ওজন নির্ণয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে স্থলবন্দরের নতুন কর্মকর্তারা মাটি ও বালির ওজন ছাড় না দেওয়ায় লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের ডাউকিতে পাথর ও চুনাপাথর বোঝাই তিন শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।

আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, বর্ডারে পণ্য আটকা পড়ায় ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতিদিনই আমদানিকারকদের ব্যাংক ঋণের সুদ গুনতে হচ্ছে। এ ছাড়া পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় লোড-আনলোড এবং স্থানীয় পাথরভাঙার কলগুলোর হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ