ছাত্র ইউনিয়নে বিভক্তি!

প্রকাশিত: ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২১

ছাত্র ইউনিয়নে বিভক্তি!

অনলাইন ডেস্ক

দেশের প্রাচীনতম বামপন্থি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে বিভাজনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সবশেষ ৪০তম জাতীয় সম্মেলনে একচেটিয়া কমিটি করার অভিযোগ তুলে সংগঠনটির বড় একটি অংশ বুধবার প্রতিনিধি সভার ডাক দিয়েছে। অন্যদিকে, এই প্রতিনিধি সভাকে ‘অবৈধ’ দাবি করেছে বর্তমান কমিটি।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর ৪০তম জাতীয় সম্মেলনে ফয়েজ উল্লাহকে সভাপতি ও দীপক শীলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র ইউনিয়নের ৪১ সদস্যের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়। তবে সংগঠনের এক অংশের দাবি, ওই সম্মেলনে একাধিক গঠনতান্ত্রিক ব্যত্যয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চা বিনষ্ট করা হয়েছে।

ছাত্র ইউনিয়নের কয়েকটি সূত্র জানায়, গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়ের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি জেলা সংসদের প্রতিনিধিরা নতুন করে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পক্ষে সই করেন। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুসারে কাউন্সিলরদের এক তৃতীয়াংশ সই করলে ২১ দিনের মধ্যে নতুন করে কাউন্সিল আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি জয় রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দাবির পক্ষে গত জাতীয় সম্মেলনে অংশ নেয়া ২২৬ জন প্রতিনিধির মধ্যে ১১৩ জন সই করেছেন। এই সংখ্যা গঠনতন্ত্রের ধারা ১৫ অনুযায়ী এক চতুর্থাংশের বেশি।

‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই দাবি উত্থাপনের পর ২১ দিনের মধ্যে রিকুইজিশন জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করতে সভাপতি বাধ্য। তবে সভাপতি দাবি উপেক্ষা করেছেন ও ২১ দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও রিকুইজিশন জাতীয় সম্মেলন আহ্বান না করে গঠনতন্ত্রকে লঙ্ঘন করেছেন।’

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের মুনীর চৌধুরী মিলনায়তনে প্রতিনিধি সভা ডাকা হয়েছে বলে জানান জয় রায়।

জয় রায়ের সই করা প্রতিনিধি সভা আহ্বানের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের দায়িত্ব যেখানে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও ঐক্যকে সমুন্নত রাখা, সেখানে সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের অন্যান্য সদস্যরা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে সংগঠনকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এমতবস্থায় গঠনতন্ত্রকে সমুন্নত রাখা ও সংগঠনের ঐক্যের স্বার্থে রিকুজিশন জাতীয় সম্মেলন অপরিহার্য।’

এই প্রতিনিধি সভার আয়োজকদের একজন ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি নজির আমীন চৌধুরী জয়। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিনিধি সভার ব্যাখ্যা একটাই- সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্রের ভুল ব্যাখা দিচ্ছেন। সেটার ব্যাপারে জাতীয় সম্মেলনের যারা প্রতিনিধি, যারা সাংগঠনিক ভাবে এবং গঠনতান্ত্রিকভাবে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী তারা একটা সিদ্ধান্ত বা পর্যালোচনার দিকে যেতে চাচ্ছেন।’

ছাত্র ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট এক নেতা জানান, ১৩ জানুয়ারির প্রতিনিধি সভা থেকে পাল্টা কমিটির ঘোষণাও আসতে পারে। তেমনটি ঘটলে ষাটের দশকে মেনন-মতিয়া গ্রুপের বিরোধের পর সংগঠনটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে।

ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশটির বিরোধিতা করে অনড় অবস্থান নিয়েছে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন অংশ। বুধবারের প্রতিনিধি সভাটি ‘ছাত্র ইউনিয়নের নয়’ উল্লেখ করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিও পেয়েছে নিউজবাংলা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবগত না করে বেছে বেছে কিছু নেতাকর্মীকে প্রতিনিধি সভায় যোগদানের চিঠি প্রেরণ উপদলীয় তৎপরতার শামিল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ সংগঠনে প্রকাশ্য বিরোধ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়নে অভ্যন্তরীণ সব সময় আলোচনা-সমালোচনা থাকে, সেটা ছাত্র ইউনিয়নের ফোরামেই আমরা সমাধান করে থাকি। এখন যে আলোচনা সমালোচনা আছে সেটা আমরা ফোরামেই সমাধান করে ফেলব।’

ছাত্র ইউনিয়ন বিভাজনের মুখোমুখি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলোচনা সমালোচনা মানেই বিভাজন হিসেবে আমরা দেখতে চাই না। প্রতিবারই কমিটিকেন্দ্রিক কিছু আলোচনা সমালোচনা থাকে সেটা এবারও আছে।

‘এরই মধ্যে আমাদের সহযোদ্ধা যারা আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা অনেকটাই সমাধানের জায়গায় পৌঁছে গেছি। আর কিছুদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সমাধান করে ফেলব।’
সূত্র : নিউজবাংলা

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
      1
16171819202122
23242526272829
30      
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ