লোকবল সংকটে নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন সালুটিকর বাজার ভুমি অফিস,

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২১

লোকবল সংকটে নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন সালুটিকর বাজার ভুমি অফিস,

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন সালুটিকর বাজার ভূমি অফিসে জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে ভূমি কার্যক্রম সেবা। ভুগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকার লোকজনকে। প্রতিদিন নন্দীরগাঁও ও তোয়াকুল ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ভূমি অফিসে নামজারী, ফর্সা, এবং রেকডিও বিভিন্ন কাজে লোকজন আসে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। উপজেলার এই জনগুরুত্বপুর্ণ ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন থেকে ৬টি পদের মধ্যে ৪ টি পদ শূন্য রয়েছে। অফিস সহকারী ৩ টি পদের মধ্যে ২টি শূন্য, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ১টি শূন্য,ভূমি উপসহকারি কর্মকর্তা ১টি শূন্য। বর্তমানে কর্মরত আছেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা একজন এবং অফিস সহায়ক একজন।

লোকবল সংকটের ফলে ভূমিসংক্রান্ত কাজের জন্য আসা সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন সালুটিকর ভূমি অফিস।
ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লোকজন আসেন, ভুমি অফিসে নামজারী, খাজনা, হাটবাজার ইজারা, জলমহাল ইজারা, বালু মহাল ইজারা, অর্পিত সম্পত্তি বন্দোবস্ত, নবায়ন, ভূমি উন্নয়ন কর, কৃষি-অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত, ফর্সা প্রদান, ভুমির শ্রেণী পরিবর্তন, ভূমির মালিকানা সনদপত্র প্রদান, জাবেদা নকলের জন্য নতি ও খতিয়ানের নতি প্রদান সহ বিভিন্ন দরখাস্তের উপর সেবা নেওয়ার জন্য।

সরেজমিন পরিদর্শনে, বিভিন্ন কাজের সেবা নিতে আসা লোকজন বিশেষ করে বৃদ্ধ লোকদের বারান্দায় ঘোরাফেরা ও পায়চারী করে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়।ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে হাজারো সমস্যার মধ্যে প্রচন্ড জনবল সংকট মহামারী আকার ধারন করেছে। জনবল সংকট এতটাই প্রকট যে, বিভিন্ন উপজেলায় একজন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা একাধিক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। একাধিক ভূমি সহকারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন থেকে প্রায় আট বছর আগে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সিনিয়র স্কেলে বেতন প্রদানের জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল এবং সে গেজেট অনুযায়ী অনেক উপজেলায় ভূমি কর্মকর্তাগণ বেতন উত্তোলনও করেছিলেন। এ অবস্থায় হঠাৎ করে একটি নির্বাহী আদেশে এই উর্ধ্বতন বেতন স্কেল-এর উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর এভাবে ‘অবৈধ’ স্থগিতাদেশ করায় সংক্ষুব্ধ ভূমি কর্মকর্তাগণ হাইকোর্টে যথারীতি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আর এ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ পদোন্নতি সহ সবকিছু বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি ভূমি সহকারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করে এবং বর্ধিত বেতন স্কেলের গেজেট বহাল রেখে নতুন নিয়োগ বিধি প্রস্তুত করলেও অজানা কারণে তা আলোর মুখ দেখছে না। একই সাথে উর্ধ্বতন/বর্ধিত গেজেটেড বেতন স্কেলের উপর আনিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করাও হচ্ছে না। এছাড়া অনেক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পেনশনে যাওয়ার কারণে অধিকাংশ অফিসে ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের পদ শূণ্য হয়ে পড়েছে। যার কারণে ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে বিরাট স্থবিরতা ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে বিভিন্ন ধরনের কাজ বহু গুণ (ক্ষেত্র বিশেষে ১০/১৫ গুণ) বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ দিবানিশি প্রতিদিন গড়ে ১৩/১৪ ঘন্টা করে কাজ করেও পেন্ডিং কাজ শেষ করতে পারছেন না। অভারটাইম এর জন্য কোন বাড়তি পারিশ্রমিক তো নয়ই, বরং অতিরিক্ত পরিশ্রমের ও কাজের চাপে অনেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। লোকবল সংকট গাণিতিক হলেও কাজের পরিধি জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারছেন না বলেও জানান। বর্তমানে কাজের ব্যাপকতার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ১০/১২ জন স্টাফ দরকার বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। যদি উর্ধ্বতন বেতন স্কেলের উপর আনিত স্থগিতাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হয় এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক লোক নিয়োগ দেয়া না হয়, তাহলে একদিকে যেমন সেবাগ্রহীতাগণ মারাত্মকভাবে সেবা বঞ্চিত হবেন, অন্যদিকে লোকবল হারিয়ে ভূমি অফিসগুলো সম্পূর্ণরূপে স্টাফশূণ্য হয়ে পড়বে ও বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ভেঙে যাবে। তাই ভূমি অফিস গুলোতে জনবল নিয়োগ করা সময়ের শ্রেষ্ঠ দাবিতে পরিণত হয়েছে।

এছাড়া, একজন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে মাঠেও কাজ করতে হয়, কোর্টৈ গিয়েও সরকারি সাক্ষ্য প্রদান করতে হয়, আকস্মিক ভাবে বহু ইমার্জেন্সি কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
তাই উক্ত অফিসগুলোতে স্টাফ নিতান্তই কম থাকায় একজন সেবা গ্রহীতা একটি কাজে ভূমি অফিসে একাধিক দিন এসেও কর্মকর্তাকে না পেয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। এতে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
তাই জনস্বার্থে অবিলম্বে ভূমি অফিস গুলোতে জনবল নিয়োগ করা একান্ত প্রয়োজন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
      1
16171819202122
23242526272829
30      
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ