ভালো করে কথাই বলতে পারেন না, অথচ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী: ট্রাম্প

প্রকাশিত: ৫:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০

ভালো করে কথাই বলতে পারেন না, অথচ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী: ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক :;

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের কড়া সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, ‘একটা লোক ভালো করে কথা পর্যন্ত বলতে পারে না। অথচ উনিই আপনাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন।’

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা বলেন। সমালোচনার পরই ট্রাম্প বলেন, বাইডেনই হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থতা ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। সম্প্রতি তিনটি জনমত সমীক্ষায় ট্রাম্পের পরাজয়ের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। তবে এসব জরিপকে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যা দিয়েছে রিপাবলিকান শিবির।

ট্রাম্প সাক্ষাতৎকারের শুরুটা করেছিলেন জো বাইডেনকে আক্রমণ করে। মহামারী মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং লকডাউনের জেরে আর্থিক মন্দা নিয়ে দেশের সব সেলিব্রেটি পর্যন্ত মুখ খুলেছেন। সেই সঙ্গে বর্ণবিদ্বেষবিরোধী আন্দোলনে ট্রাম্পের সেনা পাঠানোর হুমকিও ভালো চোখে নেননি অনেকেই। সাক্ষাৎকারটির ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে বাইডেনও প্রেসিডেন্টকে আক্রমণ করে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ট্রাম্প শিশুদের মতো আচরণ করেছেন। মনে হচ্ছে ওকে ছাড়া আমাদের সবার ওপরেই প্রভাব ফেলেছে এই মহামারী। প্রেসিডেন্টের কাজ এটা নিয়ে চিৎকার করা নয়, বরং যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে এর জন্য কিছু করা।’

ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর এই বক্তব্যেরই প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথমে বাইডেনের এক গুচ্ছ সমালোচনা করেন। তার পরেই বলেন, ‘একটা লোক ভালো করে কথা পর্যন্ত বলতে পারে না। অথচ উনিই আপনাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। কারণ এ দেশেরই কিছু মানুষ আমায় ভালোবাসেন না হয়তো।’ তার পরেই তার সংযোজন, ‘আমি আমার কাজটাই করছি।’

‘নিজেকে সুন্দর বা অসুন্দরভাবে প্রকাশের কোনো ইচ্ছা নেই। তবে ওই লোক (জো বাইডেন) দুটি বাক্যকে এক করে কথাই বলতে পারেন না। আর তিনিই কিনা আপনাদের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। এর কারণ হলো– হয়তো দেশের অনেক মানুষ আমাকে ভালোবাসেন না।’

জনমত জরিপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। এনপিআর, পিবিএস নিউজ আওয়ার ও ম্যারিস্ট পরিচালিত সর্বশেষ জনমত জরিপে ট্রাম্পের পক্ষে জনমত ৪০ শতাংশ এবং বিপক্ষে ৫৮ শতাংশ বলে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একই জরিপে ৪৯ শতাংশ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে মোটেও সমর্থন করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সমীক্ষা এও বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভিনদেশীদের মধ্যে বাড়ছে বর্তমান প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা। মিশিগান, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়ার মতো প্রদেশে ৫০ শতাংশেরও বেশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত চাইছেন, ট্রাম্পই ফের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসুন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মাঝেমধ্যেই বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে পড়ছেন। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ছাড়াই মিইয়ে যাচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৩০টি রাজ্যে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঘটছে এখন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওকলাহোমাতে তার নির্বাচনী সভায় বলেছিলেন– টেস্ট বেশি হচ্ছে বলে সংক্রমণের হারও বেশি দেখাচ্ছে। এ কারণে টেস্টিং কমিয়ে আনার জন্য বলেছেন— ট্রাম্পের এমন কথা বলার পর সমালোচনা শুরু হয়। পরে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কৌতুক করেই এমনটি বলেছিলেন।

আমেরিকার শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি এস ফাউসি বলেছেন, করোনাভাইরাস চলে যাচ্ছে না, কেউ তাদের টেস্ট কমিয়ে আনতেও বলেননি। টেস্টিং বেশিই করা হবে।
এর আগেও ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে গুরুত্ব না দিয়ে সাধারণ ফ্লুর সঙ্গে তুলনা করেন। এ কারণে তাকে কড়া সমালোচনা সইতে হয়েছে।

গত চার মাসের কম সময়ে করোনায় সংক্রমিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ লাখের বেশি মানুষ। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছেও নেই কোনো দেশ।