অতিষ্ঠ গ্রাহকদের নানা অভিযোগ : বিল পরিশোধে সময় বৃদ্ধির দাবি কমলগঞ্জে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি

প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০

অতিষ্ঠ গ্রাহকদের নানা অভিযোগ : বিল পরিশোধে সময় বৃদ্ধির দাবি কমলগঞ্জে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল নিয়ে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন বাড়ি বাড়ি না গিয়ে, মিটারের রিডিং না দেখে, অফিসে বসেই তৈরি করছেন মনগড়া বিল। গত ুই মাস ধরে বি্যুৎ বিল মাত্রাতিরিক্ত বাড়ানোয় গ্রাহকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। কমলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতি মাসে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল বানালেও উপজেলার লোডশেডিং, যান্ত্রিকত্রুটিসহ নানা অব্যবস্থাপনা ূর করতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। মৌলভীবাজার পল্লী বি্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনালের অধীনস্থ ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ট হয়ে উঠছেন গ্রাহকরা। দ্বিগুণ, তিনগুণ বিদ্যুৎ বিলের সাথে তিন মাসের বিল সংযুক্ত করা হয়েছে। গ্রামের সহজ, সরল কৃষক, দিনমজুররা এসব বিল নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন। করোনা সংক্রমন জনিত কারণে বিভিন্ন স্থানে ভুতুড়ে বিলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একসাথে তিন মাসের যুক্ত ও বড় অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিলম্ব মাশুল ছাড়া সময় বৃদ্ধির দাবি করছেন গ্রাহকরা।
জানা যায়, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনালের অধীনস্থ গ্রাহকরা মে মাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে তিন মাসের যুক্ত বিলে অনেক গ্রাহকদের ইচ্ছেমতো রিডিং লিখে তৈরি করা হয়েছে ভুতুড়ে বিল। বর্তমানে গ্রামগঞ্জে অভাব অনটনের সময়কালে এসব বিল নিয়ে ‘মাড়ার উপর খাড়ার ঘা’ সৃষ্টি হয়েছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ তুলেছেন।
কমলগঞ্জের বিদ্যুৎ গ্রাহক কামাল উদ্দীন বলেন, আমার বিদ্যুৎ বিলে বর্তমান মিটার রিডিং দেখানো হয়েছে ১৯০০ আর পূর্ববর্তী ১৭৯০। পরে মিটার চেক করে দেখি বর্তমান মিটার রিডিং ১৬১৫। এটি জুন ২০২০ মাসের হিসাব। উপজেলার শ্রীনাথপুরের জমির উদ্দীন চৌধুরীর রাইছ মিলে ব্যবহৃত ১১৫ ইউনিটের বিল আসে ৮ শমিক ৫০ টাকা হিসাবে। সেখানে ১৬৩৫ টাকার একটি ভুতুড়ে বিল খোনো হয়েছে। পতনঊষারের আব্দুল হান্নান এর হিসাব নাম্বার ১১১/৫৫০০। তিনি বলেন, প্রতি মাসে তিন থেকে সাড়ে তিনশ টাকা হারে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল দিয়ে আসছি। তাছাড়া ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্রিল ২০২০ সনের তিন মাসের এককালীন ১০৬০ টাকা বিল পরিশোধ করেছি। অথচ শুধু মে মাসেই বিল আসে ১২৪৮ টাকা। কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আগে আমার মাসিক বিদ্যুৎ বিল ৭৫ টাকা থেকে ৮০ আসতো। মে মাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে তিন মাস যুক্ত করে বিদ্যুৎ বিল আসে ১৮৯৮ টাকা। এভাবে আরও বেশ কিছু গ্রাহক বিদ্যুৎ বিলে আকষ্মিকভাবে দ্বিগুণ, তিনগুণ টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।
তোয়াবুর রহমান, সামসুদ্দীন আহমদ, আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন বিদ্যুৎ গ্রাহক বলেন, বিদ্যুৎ বিলের নামে গ্রাহকদের ধোঁকা দিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। করোনাভাইরাসের অজুহাতে আমাদের কাছ থেকে ুই মাসে ড়ে থেকে দ্বিগুণ বিল বেশি নিচ্ছে। এমন ভুতুড়ে বিল এর আগে কখনো হয়নি। আমাদের মতো সহজ, সরল ও নিম্নআয়ের লোকেরা এগুলো নিয়ে অফিসে আসা যাওয়া করতে যাতায়াত খরচ ও একদিনের রোজ সবই নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে বাড়তি বিল দিতেও বাধ্য হচ্ছেন। তারা আরও বলেন, বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে আয় রোজগার না াকায় এমনিতেই সঙ্কটে দিনযাপন করতে হচ্ছে। তার উপর একসাে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করা বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। বিল পরিশোধের এই সময় আরও বর্ধিত করা প্রয়োজন বলে তারা দাবি জানান।
বিদ্যুৎ গ্রাহকরা বলেন, সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট ছাড়াও বিদ্যুৎ বিলের সাথে প্রতি মাসে শ টাকা হারে মিটার ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে। অথচ টাকা দিয়ে মিটার কিনে নেওয়ার পরও মাসে মাসে আজীবন মিটার ভাড়া দিতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে সঠিকভাবে তারকি করারও কেউ নেই। লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ চলে গেলে ীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও কারন জানতে চেয়ে প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরে মোবাইলে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেন না।
অভিযোগ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ জোনালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী গণেশ চন্দ্র াশ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাহকরে বাড়িতে গিয়ে মিটার রিডিং নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই গড় বিল করা হয়েছে। তবে যারা অফিসে বিল নিয়ে আসছেন তাদের সংশোধন করে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের পরবর্তী মাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে কর্তন করা হবে। অতিরিক্ত বিলের সমস্যা যাদের হয়েছে তারা অফিসে এসে সংশোধন করার সুযোগ পাবেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ