উম্মতের প্রতি রসুলুল্লাহর ভালোবাসা

প্রকাশিত: ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২০

উম্মতের প্রতি রসুলুল্লাহর ভালোবাসা

মো. আবু তালহা তারীফ

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য অবিরাম চেষ্টা করেছেন। কোন কাজ করলে নেক আমল হয় এবং কোনটি করল নাফরমানি হয়, সে সম্পর্কে তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন। উম্মতকে ইহ-পরকালীন সব সমস্যা ও ক্ষতি থেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ কিছু বস্তুকে হারাম করেছেন অথচ তিনি এও অবগত আছেন যে, তোমাদের অনেকেই তাতে লিপ্ত হবে। আর আমি তোমাদের হেফাজত করেছি। অথচ তোমরা পতঙ্গের সেই আগুনে ঝাঁপ দিতে উদ্যত হচ্ছো।’ আর উম্মতের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা ও মহাক্ষতি হলো দুনিয়ায় ইমানহারা হওয়া এবং তারই পরিণতিতে আখিরাতে স্থায়ী জাহান্নামি হওয়া। এসব ক্ষতি থেকে উম্মতের রক্ষায় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি চিন্তিত থাকতেন। সবসময় ভাবতেন কীভাবে মানুষকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা যায়। নিজেকে বিলীন করে দিয়েছিলেন তাঁর উম্মতের জন্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওইসব লোক ইমান আনছে না এ কারণে কি তাদের চিন্তায় ও পেরেশানিতে আপনি নিজেকে শেষ করে দেবেন।’ সুরা আশ শুরা, আয়াত ৩।

উম্মতের জন্য তিনি পেরেশান ছিলেন। বদর প্রান্তরে যখন ৩১৩ জন সাহাবি যুদ্ধ করতে গেলেন প্রিয় নবী মহান প্রভুর দরবারে তাঁর সাহাবিদের জন্য দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! এই সাহাবিরা আমার অনেক আদরের, এদের তুমি মেরো না, এদের তুমি রক্ষা কর।’ ওহুদে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাঁত ভেঙেছে, মাথা ফেটেছে; খন্দকের যুদ্ধে মাটি বহন করতে করতে নিজ শরীরে দাগ হয়ে গেছে; তায়েফে ইসলাম প্রচার করতে গেলে দুষ্ট ছেলেরা তাঁর সঙ্গে ঠাট্টা করেছে, গালমন্দ করেছে। তারা রহমাতুল্লিল আলামিনের ওপর কঙ্কর নিক্ষেপ করেছে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। জ্ঞান ফিরলে দাঁড় করিয়ে পুনরায় পাথর নিক্ষেপ করলে তাঁর পুরো শরীর রক্তে লাল হয়ে যায়। জুতা রক্তের কারণে পায়ের সঙ্গে লেপ্টে যায়। হাঁটতে পারেন না তিনি। তাঁর চোখের কোণ দিয়ে টপটপ করে রক্ত ঝরে তায়েফের মাটি ভিজে যায়। ফেরেশতারা এসে তাঁর কাছে অনুমতি চাইল তায়েফ ধ্বংস করে দিই। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, ‘না, তারা বোঝে না, যদি বুঝত তাহলে আমাকে অত্যাচার করত না, তোমরা ওদের ধ্বংস কোরো না, ওদের ওপর রহম কর।’
রহমতের নবী গুনাহগার উম্মতের প্রতি বিশেষ স্নেহশীল ছিলেন। তিনি করেন, ‘প্রত্যেক নবী-রসুলকে কবুলের গ্যারান্টি দিয়ে একটি দোয়া করার অনুমতি মহান আল্লাহ দিয়েছিলেন। প্রত্যেক নবী ও রসুল আল্লাহর গ্যারান্টি দেওয়া দোয়াটি দুনিয়ায় করেছেন, আর আল্লাহ তাদের সে দোয়াটি কবুল করেছেন, কিন্তু আমি অখিরাতে আমার সেই কবুলের দোয়াটি গুনাহগার উম্মতের নাজাতের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি।’ মুসলিম।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ