সিলেট-ঢাকা চার লেন : কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই!

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, মে ২, ২০২১

সিলেট-ঢাকা চার লেন : কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই!

অনলাইন ডেস্ক :: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা আবার ঢাকা সিলেট চারলেন সড়কের কথা বলি। কিন্তু কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই এমন অবস্থা। এ জন্য সিলেটবাসী খুবই অসন্তুষ্ট ও বিরক্ত। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কাজ দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলে জনগণ হতাশ হবে। আমরা শুরু করে কাজে গতি দিতে পারলে জনগণের হতাশা চলে যাবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও প্রধান প্রকৌশলী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

রবিবার (২ মে) সকালে সিলেট জোন, বিআরটিসি ও বিআরটএ’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে সভায় যুক্ত হন।

যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কাজ শুরু হতেই অনেক দেরি হয়ে যায়। দরপত্র, মূল্যায়ন, ওয়ার্ক অর্ডার প্রক্রিয়া একটু সহজতর করার জন্য আমি প্রধান প্রকৌশলীকে বলবো। অনেকের গাফিলতির জন্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।’

ওবায়দুল কাদের এ সময় জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ঢাকা-সিলেট-তামাবিল চারলেন সড়কের কাজের খোঁজ খবর নেন। এ জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলবো, এ ব্যাপারে আরও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাক এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ ব্লাকস্পটগুলো সরলীকরণ করতে হবে।’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ অনুমোদন দেওয়া হয়।

সিলেট-ঢাকা চার লেন প্রকল্পে ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণ দেবে এডিবি। মোট ব্যয় ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাকি তিন হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে। এটি বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। আলাদা সার্ভিস লেনসহ সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত ৯৮৬ দশমিক ৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এ জন্য ব্যয় হবে চার হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে, নির্মাণ করা হবে ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস।

সিলেট-ঢাকা মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। বাঁক সরলীকরণসহ অধিক মাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে। শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চার লেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রশস্ত করাসহ প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি সেতু, ৩০৫টি কালভার্ট, ৭টি ফ্লাইওভার/ওভারপাস, ৬টি রেলওয়ে ওভারপাস থাকবে।

প্রকল্প শুরুর এলাকা কাঁচপুর থেকে সিলেটের মোট দূরত্ব ২২৩ দশমিক ১২৮ কিমি। এর মধ্যে ১১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত। এর উন্নয়ন এলওসির আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরব ব্রিজ বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ৩২৮ কিলোমিটার।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ