হেফাজতে ভাঙনের সুর, শফীপুত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বাবুনগরী

প্রকাশিত: ৮:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২০

হেফাজতে ভাঙনের সুর, শফীপুত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বাবুনগরী

অনলাইন ডেস্ক ::

সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানীর একটি ফোনালাপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, আমার বিরুদ্ধে ‘জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে মানুষকে নিয়ে মার খাইয়েছি’ বলে যে কথা বলেছে, তা সম্পূর্ণ নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

বুধবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ সব মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্রও সম্পর্ক নেই। অতীত-বর্তমানে কোনো সময়ই জামাতের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল না; বরং পুরো জীবন আমার লেখালেখিতে ও লাখ লাখ মানুষের বিশাল সমাবেশে বয়ান-বক্তৃতার মধ্যে জামায়াতের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে আমি দেশবাসীকে সচেতন করে আসছি।

জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা পরিকল্পিত মিথ্যাচার দাবি করে তিনি আরও বলেন, হেফাজত আমিরের পুত্রের এমন মিথ্যাচার আমাকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে আমি মনে করি। এগুলো আমার মানহানি করার অপচেষ্টা।

বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, কিছুদিন থেকে আমি লক্ষ্য করছি যে, তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং সাজানো কথা রটিয়ে, উস্কানিমূলকভাবে সরকার এবং প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। এ সবের নিন্দা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার নেই।

শফীপুত্র মাওলানা আনাস মাদানী থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয় জানিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা আনাস মাদানী ফোনালাপে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছেন।

তিনি শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে এমন ডাহা মিথ্যা কথা বলতে পারবে, তা আমি আশা করিনি। অথচ জেলে গেলাম আমি, রক্ত দিলাম আমি। রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করলাম আমি। সেই রাতে হেফাজতের সমাবেশে কী হয়েছিল তা জাতি জানে, কিন্তু মামলার আসামি হলাম আমি।

শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে যা হয়েছিল তা আল্লামা শফীর অবগতিতেই হয়েছে বলে দাবি করেন আল্লামা বাবুনগরী।

হেফাজত মহাসচিব বলেন, আমীরে হেফাজতের আনুগত্য করে, লাখ লাখ নবীপ্রেমিক জনতাকে বিপদের মুখে ঠেলে না দিয়ে আমার জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঝুঁকি নিয়ে শাপলার মঞ্চে অটল থাকাই কি আমার অপরাধ?

বাবুনগরী বলেন, আমি আমীরে হেফাজতের নির্দেশ মতে লালবাগ থেকে শাপলা চত্বরে গিয়েছি এবং আমীরে হেফাজতের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত শাপলা চত্বরে অবস্থান করেছি। বারবার মিডিয়াকে বলা হয়েছে যে, সেদিন যা হয়েছে আমীরে হেফাজতের নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং এতদিন পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর নামান্তর।

এখনকার সরকারবান্ধব আলেমরাই ২০১৩ সালে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করেছিল বলে দাবি করেন জুনায়েদ বাবুনগরী।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে কারা জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে সুবিধা ভোগ করেছে আর আজ সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে কওমিদের নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে হেফাজতকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে, তা জাতি ভালো করেই জানেন। সময় মতো তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ