ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকের মহানুভবতায় অসহায় বাবার স্বস্তি

প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২০

ওসমানী হাসপাতালের পরিচালকের মহানুভবতায় অসহায় বাবার স্বস্তি

অনলাইন ডেস্ক :: সিলেটের মীরের ময়দান এলাকার বাসিন্দা সানু মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত। করোনার এই কঠিন সংকটে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখেন তিনি। খারাপের দিকে যেতে থাকে মেয়ের শারীরিক অবস্থা।

মেয়েকে নিয়ে এ বেসরকারি হাসপাতাল আর ক্লিনিকে ছুটতে থাকেন। কিন্তু কোথাও নেই চিকিৎসা। করোনা আতঙ্কে কোথাও ঠাঁই হয়না সানু মিয়ার মেয়ে বুশরার। মেয়ের অসুস্থতা বাড়ে, সেই সাথে বাড়ে বাবার অসহায়ত্ব। চোখের সামনে মেয়ের এই অবস্থা কিভাবে সহ্য করবেন একজন বাবা। বিনা চিকিৎসায় চোখের সামনে সন্তান মারা যাবে এটা ভাবতে পারেন না কোন বাবা-ই।

পরিচিত একজনের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা জাস্ট হেল্প ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সাথে। মিজানুর রহমান তাকে অযথা ছুটোছুটি করতে বারণ করেন। পরামর্শ দেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর।

যেখানে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে মিলছে না চিকিৎসা, সেখানে সরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা! করোনার এই সময়ে এতো সিরিয়াস রোগী কী ওসমানীতে ভর্তি করবে? এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভূগতে থাকেন সানু মিয়া। কিন্তু বিকল্প কোন পথ খোলা নেই।

দ্বিধাগ্রস্থ মন নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমানকে ফোন দেন জাস্ট হেল্প ফাউন্ডেশনের আরেক কর্মকর্তা সৈয়দ সাইদুল ইসলাম দুলাল। বুশরার শারীরিক অবস্থা, বাবার অসহায়ত্ব- সব খুলে বলেন। ধৈর্য্য আর আগ্রহ নিয়ে অসুস্থতার কথা শুনেন ইউনুছুর রহমান। আশ্বস্থ করেন বুশরার সুচিকিৎসার।

কেবল আশ্বাসে সীমাবদ্ধ থাকেনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমানের তৎপরতা। বুশরার সুচিকিৎসার জন্য নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের। হাসপাতালের পরিচালকের তত্ত্বাবধান আর চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় বুশরার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। স্বস্তি ফিরেছে অসহায় বাবা সানু মিয়ার মনে।

পরিচালক মো. ইউনুছুর রহমানের মানবিকতা আর কর্মতৎপরতার প্রশংসা করতে গিয়ে সাইদুল ইসলাম দুলাল তার ফেসবুকে লিখেছেন, ইউনুছুর রহমান তার কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন মানুষ মানুষের জন্য। তিনি পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকে ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বেড়েছে রোগীদের আস্থা। দূর হয়েছে অনেক অনিময়। এখন কেউ আর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করে না। দেশের যে হাসপাতালে ইউনুছুর রহমানের মতো একজন পরিচালক থাকবেন, সে হাসপাতালের চেহারা অবশ্যই পরিবর্তন হবে- এমন প্রশংসাও করেন সাইদুল ইসলাম।