প্রেমের বলি ছাতকের সানি, আসামির স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২১

প্রেমের বলি ছাতকের সানি, আসামির স্বীকারোক্তি

হাসান আহমদ , ছাতক :: সুনামগঞ্জের ছাতকে ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিকাশ কোম্পনীর কর্মচারী সানি সরকার (২৪) কে। সে পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের মন্ডলীভোগ (ঘোষবাড়ী) এলাকার বাসিন্দা কাজল সরকারের একমাত্র ছেলে। হত্যা মামলার প্রধান আসামী শোয়েব আহমদ (২২) সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজেষ্ট্রিট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধিতে হত্যার বিবরণ তুলে ধরে। শোয়েব উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

বহুল আলোচিত সানি হত্যার প্রধান আসামী শোয়েব বিজ্ঞ আদালতে দেওয়া জবানবন্ধিতে জানায়, প্রায় দু’বছর ধরে সানি সরকারের সাথে দক্ষিণ মন্ডলীভোগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়ার কন্যা ছাতক সরকারী কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী শিপা আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।

হত্যাকান্ডের প্রায় ৩ সপ্তাহ পূর্বে শোয়েবের সাথে নতুন করে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী করে শিপা আক্তার। নতুন এই প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা হয়ে দাড়ায় সানি সরকার। বিষয়টি জানতে পেরে সানি ও শোয়েবের মধ্যে একাধিকবার বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে সানি সরকারকে ডেকে নিয়ে শোয়েব ও তার সহযোগীরা। সেখানে আবারও সানির প্রেমিকা শিপাকে নিয়ে তুমুল ঝগড়া হয় দু’জনের মধ্যে।
ঘাতক শোয়েব ও তার সহযোগীরা এক পর্যায়ে সানি সরকারকে বেদড়ক পিটিয়ে জখম করে ফেলে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার ৪ দিন পর চিবিৎসাধীন অবস্থার সানির মৃত্যু হয়।

এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সানি পিতা শোয়েবকে প্রধান আসামী করে এজহার নামীয় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সানি হত্যার ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রথম দিনেই মামলার ২নং আসামী দক্ষিণ বাগবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিনের ছেলে নাইম আহমদ (২০) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সিলেট নগরীর মধুবন মাকের্টের পিছন থেকে শোয়েবকে গ্রেফতার করে ছাতক থানা পুলিশ। সানি হত্যার প্রতিবাদে আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বুধবার শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে সর্বস্থরের জনতা এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় করেছে।

সানি হত্যার পর প্রেমিকা শিপা আক্তার তার পরিবার নিয়ে শহর ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার মিয়া বলেন, এই মামলার এজহার নামীয় দু’আসামী এখন জেল হাজতে। হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হলেও অন্য আসামীদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।