শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে

প্রকাশিত: ৯:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২০

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক :; খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসাবে বাজেটের সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে। বাজেটের ১৫ দশমিক ১ শতাংশই এই খাতে আসন্ন বছরে ব্যয় করা হবে। তবে চলতিবছরের চেয়ে আসন্নবছরে এই খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমেছে। চলতিবছরে বাজেটের ১৫ দশমিক ২ শতাংশই ছিল শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বরাদ্দ।

এদিকে করোনাকালে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষায় মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি ছিল সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে। কিন্তু কেবল শিক্ষায় বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। অবশ্য চলতি বাজেটের তুলনায় এই বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। গতবছর বাজেট পেশকালে চলতিবছরের জন্য বাজেটের ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছিল।

শিক্ষায় অন্যতম জনপ্রিয় কর্মসূচি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়নি। কেবল মামলা-মোকদ্দমার বিপরীতে নতুন সৃষ্ট ব্যয়ের জন্য থোক হিসেবে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব আছে। তবে সুখবর আছে প্রাথমিক শিক্ষায়। নতুন বছরে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে দুপুরে রান্না করা খাবার দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমে সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য শস্যের সংস্থান রাখার কথা বাজেটে বলা হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, করোনাকালীন ঝুঁকিপ্রশমন ও পরবর্তী সময়ের পুনরুদ্ধার কর্মসূচিা জন্য আমরা এককভাবে শিক্ষা খাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখার দাবি করেছিলাম। বরাদ্দ বেড়েছে এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। বিশেষ করে স্কুল মিল কর্মসূচি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। কিন্তু উপবৃত্তি কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দ ও দিকনির্দেশনা থাকা দরকার ছিল। অবশ্য শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ‘প্রযুক্তি’ বলতে শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য উভয় খাতই লাভবান হত।

প্রস্তাবিত বাজেটে চারটি মন্ত্রণালয়কে মিলিয়ে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় ৩৩হাজার ১১৭ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগে ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় বরাদ্দ করা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১৭ হাজার ৯৪৬ এবং তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

নতুন অর্থ বছরে বাজেটের আকার বেড়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ৪৫হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন এবং অনুন্নয়ন উভয় খাতে অংকের হিসাবে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা। এছাড়া কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায় ৭হাজার ৩০৭ কোটি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২৩হাজার ৭০১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সংসদে উপস্থাপিত বাজেটে শিক্ষার জন্য নতুন বছরে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রণোদনার কথা তুলে ধরা হয়। এর বেশির ভাগই চলতি অর্থবছরের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গ।

শিক্ষা খাতের বক্তৃতার শুরুতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে সামাজিক দুরত্বের অংশ হিসেবে মার্চের মাঝামাঝি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এতে প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেলিভিশন ও অনলাইনে দুরশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হয়। শিক্ষাখাতে আগামী অর্থবছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে এ দীর্ঘ ছুটির ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে পাঠ্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। এ কাজের জন্য আগামীবছরের বাজেটে আমরা প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান রাখছি।

এতে শিক্ষায় আগামীবছরেও উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে আরও বলা হয়, সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করাই হবে আগামী অর্থবছরের এ খাতের মূল কৌশল। ৫০৩টি মডেল বিদ্যালয়ে ইন্টারঅ্যাকটিভ ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলছে। অচিরেই সব বিদ্যালয়ে দুইটি করে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে যাচ্ছি।

বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, শিক্ষার উন্নয়নকে আরও বেগবান করতে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও উচ্চশিক্ষার গবেষণার উপর জোর দেয়া হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার সুযোগ দেশব্যাপী বিস্তৃত করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ