২০ কোটি টাকা খরচ কোথায়, জানালেন হাসপাতাল পরিচালক

প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২০

২০ কোটি টাকা খরচ কোথায়, জানালেন হাসপাতাল পরিচালক

সিল-নিউজ-বিডি ডেস্ক :: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের খরচ নিয়ে ওঠা বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। তিনি ২০ কোটি টাকা কোথায় ব্যয় হয়েছে তার হিসাবও গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে তুলে ধরেছেন।

বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে নাসির উদ্দিন বলেন, গত দুই মাসে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন চিকিৎসক, নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং আনসার সদস্যসহ মোট ৩ হাজার ৬৮৮ জন। ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী, তারা এক সপ্তাহ করোনা ওয়ার্ডে ডিউটি করার পর পরবর্তী তিন সপ্তাহ আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এ হিসাবে প্রত্যেককে ১ মাস করে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করতে হয়।

খরচের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গত দুই মাসে আবাসিক হোটেল ভাড়া, দৈনিক তিন বেলা খাবার এবং যাতায়াত ভাতাবাবদ সম্ভাব্য ব্যয় ২৬ কোটি টাকা হিসাব ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ২০ কোটি টাকার চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে চিকিৎসকদের এক মাসের খাবার খরচ বাবদ ২০ কোটি টাকা শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা মে-জুন মাসের বাজেট ২০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। মন্ত্রণালয় সেই টাকা ছাড় করেছে। সেই টাকা নিয়ে কথা উঠছে।

পরিচালক বলেন, ২০ কোটি টাকার মধ্যে হোটেলে থাকা, খাওয়া ও যাওয়া-আসার খরচও অন্তর্ভুক্ত।

তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য বিআরটিসির চারটি দ্বিতল বাস ভাড়া করা হয়। এক মাসে বাস ভাড়া ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭০ টাকা। সেই হিসাবে দুই মাসে পরিবহন ব্যয় প্রায় ১ কোটি টাকা। হিসাব করে দেখা গেছে, পরিবহন ব্যয়, হোটেলে থাকা-খাওয়াসহ দুই মাসে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এক মাসের ব্যয় হিসাব করে দুই মাসের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এতে হোটেল ভাড়া ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, খাবার খরচ বাবদ সাড়ে ৫ কোটি, পরিবহন বাবদ ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই টাকা এখনও কোনো হোটেল কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করা হয়নি।

হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী মহামারীর এ দুর্যোগকালীন জীবন ঝুঁকি নিয়ে করানো রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। এর পরও এ ধরনের উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত সংবাদ আমাদের ব্যথিত করেছে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী ‘চিকিৎসকদের এক মাসের খাবার খরচ ২০ কোটি টাকা’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয় সম্প্রতি। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। সোমবার জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রীও প্রশ্ন তুলে বলেন, এক মাসে খাবার খরচ ২০ কোটি টাকা কী করে হয়? বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ২০ কোটি টাকা খরচের ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হলেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন।

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ