গোয়াইনঘাটে করোনা উপসর্গ নিয়ে রাস্তায় পড়ে ব্যক্তির মৃত্যু, লাশ দাফনে মানবিক পুলিশ

প্রকাশিত: ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

গোয়াইনঘাটে করোনা উপসর্গ নিয়ে রাস্তায় পড়ে ব্যক্তির মৃত্যু, লাশ দাফনে মানবিক পুলিশ

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :; করোনাকালীন একের পর এক নিদর্শন রেখে চলেছে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা। সর্বশেষ এমন এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইলো সিলেটের গোয়াইনঘাট। পুলিশের এমন মানবিক আচরণে হৃদয় কেড়েছে উপজেলাবাসীসহ গোটা দেশের জনগণের।

জানা যায়, বুধবার (১৭ জুন) বিকেলে উপজেলার ২ নং পশ্চিম জাফলং ইউপির দক্ষিণ প্রতাপপুর গ্রামের জাহের আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন জ্বর, সর্দি, প্রচণ্ড গায়ে ব্যথাসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে ঔষধ কিনতে বাড়ি থেকে রাধানগর বাজারের উদ্দেশ্য বের হন। পথিমধ্যে জাফলং চা বাগান এলাকায় কোন এক সময় তার মৃত্যু হয়। সকালে স্থানীয়রা তার লাশ সনাক্তের পরও করোনা সন্দেহে কেউ লাশের কাছে আসেনি। পরে তারা পুলিশে খবর দেন।

এ সময় খবরটি চলে যায় সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর কাছেও। তিনিও বিষয়টি তাৎক্ষণিক দেখার জন্য গোয়াইনঘাট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। এই ধারাবাহিকতায় অবশেষে আজ দুপুর ১২ টায় গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ, উপ পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন, উপ পরিদর্শক (এসআই) মহসিন, কনস্টেবল আব্দুল আজিজ, হাবিবুর রহমান, সোহেল আহমদসহ বেশকজন পুলিশ সদস্যরা।

তারা জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও নিহতের লাশ উদ্ধার করে রাধানগর বাজারে নিয়ে আসেন। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পাশাপাশি এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিবের নির্দেশে গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক টিম এসে নিহত ব্যক্তির করোনার নমুনাও সংগ্রহ করে নিয়ে যান। পরে পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিনা অভিযোগে লাশ দাফনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে আত্মীয় স্বজনসহ স্থানীয়রা কেউ লাশ নিতে আসছে না এমনকি দাফনেও নিরুৎসাহিত। এমতাবস্থায় এগিয়ে এসেছে গোয়াইনঘাট থানার মানবিক পুলিশ সদস্যরা। লাশের আইনানুগ সকল প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে বিকেল ৪টায় পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রতাপপুর গ্রামে লাশ নিয়ে ছুটে যায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ সদস্যরা। সেখানে পুলিশের সদস্যরা নিহতের একজন ভাইয়ের ইমামতিতে জানাজা পড়েছেন, কবর খুঁড়েছেন এবং দাফনও করেছেন পুলিশ সদস্যরা। করোনাকালে সিলেটের গোয়াইনঘাটে চিকিৎসক, প্রশাসনের পাশাপাশি থানা পুলিশের ভূমিকাও প্রশংসনীয়।

এ ব্যাপারে কথা হলে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ জানান, সিলেট জেলায় প্রথম করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হন গোয়াইনঘাটের বীর কুলিগ্রামের ফখরুল আমিন। পাশাপাশি জেলার মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রথম মৃত ব্যক্তি ও গোয়াইনঘাটের। করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ দাফনসহ এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের থানা পুলিশ প্রতিটি সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অত্যন্ত দক্ষতার সহিত কাজ করে যাচ্ছেন। মানবিক এসব কাজে আমাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের মান্যবর সিলেট পুলিশ সুপার। এরই ধারাবাহিকতায় আজও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ করোনা সান্নিধ্য ব্যক্তির লাশ উদ্ধার এবং দাফনে কাজ করেছে। দেশসেবার মানসিকতায় আমাদের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ