• সিলেট, সকাল ১০:১৬, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কোরআনের আলোকে ইস্তিগফারের ১০ ফজিলত

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৫
কোরআনের আলোকে ইস্তিগফারের ১০ ফজিলত

Manual2 Ad Code

কোরআনের আলোকে ইস্তিগফারের ১০ ফজিলত

জাওয়াদ তাহের

 

ইস্তিগফার অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পবিত্র কোরআনে ইস্তিগফারের গুরুত্ব ও ফজিলত বারবার আলোচনা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন আয়াতে এর মাধ্যমে আল্লাহর অসংখ্য রহমত, বরকত ও দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণের কথা বলা হয়েছে।

এই প্রবন্ধে আমরা ইস্তিগফারের ১০টি ফজিলত আলোচনা করব, যা কোরআনের বিভিন্ন আয়াত থেকে প্রমাণিত।

Manual8 Ad Code

১. গুনাহ মাফের অসীম সুযোগ : ইস্তিগফারের সবচেয়ে বড় ফজিলত হলো এটি মানুষের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ ছাড়া আর কে গুনাহ মাফ করতে পারে?’
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৫)

২. আল্লাহর রহমত লাভ : পাপের কারণে বান্দার ওপর রহমতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, আর ইস্তিগফার সে দরজাকে আবার খুলে দেয়। কোরআনে এসেছে, ‘তোমরা কেন আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করো না, যাতে তোমাদের ওপর রহমত বর্ষিত হয়?’ (সুরা : নামল, আয়াত : ৪৬)

Manual2 Ad Code

৩. বৃষ্টি ও রিজিকের বরকত : ইস্তিগফার দুনিয়ার জীবনের কল্যাণ, যেমন—বৃষ্টি, রিজিকের বরকত ও সংকট মুক্তির চাবিকাঠি হিসেবেও এসেছে কোরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নুহ (আ.) তাঁর জাতিকে বলেছিলেন, তিনি (আল্লাহ) তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন…।’ (সুরা : নুহ, আয়াত : ১১)

৪. সন্তান-সন্ততির বরকত : ইস্তিগফার করার ফলে আল্লাহ সন্তান-সন্ততির বরকতও দান করেন।

নুহ (আ.) আরো বলেন, ‘তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান দ্বারা সমৃদ্ধ করবেন।’
(সুরা : নুহ, আয়াত : ১২)

৫. অর্থ-সম্পদে প্রশস্ততা : রিজিকের সংকট অনেকের জীবনের বড় দুশ্চিন্তা। আল্লাহ বলেন, ‘(ইস্তিগফারের দরুন) আল্লাহ তোমাদেরও বরকতের বৃষ্টি ঝরাবেন।’ (সুরা : নুহ, আয়াত : ১১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইস্তিগফারকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করে, আল্লাহ তার জন্য সব সংকট থেকে উদ্ধার ও সব দুঃখ থেকে মুক্তির পথ তৈরি করে দেন এবং এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে ধারণাও করতে পারেনি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৫১৮)

৬. কষ্ট ও বিপদ থেকে মুক্তি : মানুষের জীবনে কষ্ট, বিপদ, দুশ্চিন্তা, অসহায়ত্ব আসেই। তবে মুসলমানের জন্য এসবের মধ্যে আল্লাহর কাছে ফিরে আসাই সবচেয়ে বড় আশ্রয়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ কখনো তাদের শাস্তি দেবেন না, যতক্ষণ তুমি (নবী) তাদের মধ্যে আছ এবং যতক্ষণ তারা ইস্তিগফার করে।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৩৩)

তাই ইস্তিগফার আল্লাহর গজব ও আজাব থেকে রক্ষা করে।

৭. শক্তি ও সামর্থ্য বৃদ্ধি : নিয়মিত ইস্তিগফার শক্তি, সামর্থ্য, স্বাস্থ্য ও সম্মান বাড়ায়।

আল্লাহ তাআলা হুদ (আ.) কথা কোরআনে বলেছেন, ‘হে আমার জাতি! নিজেদের প্রতিপালকের কাছে গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তাঁরই দিকে রুজু হও। তিনি তোমাদের প্রতি আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের বর্তমান শক্তির সঙ্গে বাড়তি আরো শক্তি জোগাবেন। সুতরাং তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৫২)

৮. উত্তম জীবন উপহার : ইস্তিগফার শুধু ক্ষমা নয়, এটি আল্লাহর দেওয়া উত্তম জীবনের আমল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং এই (পথনির্দেশ দেয়) যে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করো, অতঃপর তাঁর অভিমুখী হও। তিনি তোমাদেরকে এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত উত্তম জীবন উপভোগ করতে দেবেন এবং যে কেউ বেশি আমল করবে তাকে নিজের পক্ষ থেকে বেশি প্রতিদান দেবেন। আর তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমি তোমাদের জন্য এক মহা দিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৩)

Manual3 Ad Code

সত্যিকারের শান্তিপূর্ণ জীবন, যা শুধু সম্পদে নয়, বরং অন্তরের প্রশান্তিতে প্রকাশ পায়, সেটাই ‘মাতাআন হাসানা’।

৯. সম্মান ও মর্যাদা লাভ : আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি প্রতিটি সদগুণধারীকে নিজের পক্ষ থেকে বেশি প্রতিদান দেবেন।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৩)

ইস্তিগফার ব্যক্তিকে সমাজে মর্যাদা ও আল্লাহর কাছে কদরের স্থান অর্জনে সাহায্য করে।

Manual2 Ad Code

১০. জান্নাতে প্রবেশ ও নিরাপদ আশ্রয় : ইস্তিগফার এটি এমন এক আমল, যা মানুষের গুনাহ মোচন করে, দোজখ থেকে রক্ষা করে এবং জান্নাতের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য জান্নাত প্রস্তুত করবেন এবং সেখানকার নদীগুলো তোমাদের জন্য প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা : নুহ, আয়াত : ১২)

তাই ইস্তিগফার হলো আখিরাতের মুক্তির চাবিকাঠি। প্রতিনিয়ত ইস্তিগফার করলে জান্নাতের পথ সুগম হয়।

বিডি প্রতিদিন

Latif Travels
Metropolitan University

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

📞 মোবাইল: +8801712540420

✉️ ইমেইল: pavel.syl@gmail.com