কামরান ভাই আমি আপনাকে কিভাবে ভুলি !

প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০

কামরান ভাই আমি আপনাকে কিভাবে ভুলি !
কামরান ভাই। আপনার তো এভাবে চলে যাবার কথা ছিলনা! হঠাৎ কেন এভাবে চলে গেলেন! না বলে, না কয়ে। আপনার আপাদমস্তক লেপ্টেছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ্। আপনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার আস্থাভাজন মুজিব সৈনিক। আপনি কখনো নতি স্বীকার করার পাত্র নন। কিন্তু মৃত্যুর কাছে নতি স্বীকার করে এবং আমাদের ‘প্রিয়জনহারা’ করে অকালেই চলে গেলেন। তবুও আপনার এই মহাপ্রস্থান মেনে নিলাম। মেনে নিলাম জীবনমৃত্যুকে আমরা বিশ্বাস করি বলে।তবে আপনার আদর্শ্ ধারণ করে আমরা যে ক’দিন এ পৃথিবীতে বেঁচে আছি, কাজ করে যাবো মানুষ ও দেশের প্রয়োজনে। যা আপনি করতেন। অর্থাৎ আপনার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার কাজ এখন আমাদের। আপনার প্রিয় সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা? আমরাই আপনার প্রিয় সংগঠনকে বাঁচিয়ে রাখবো এই বাংলার জমিনে।আপনার প্রিয় জন্মস্থান সিলেটের মাটিতে। আপনি ভালো থাকুন ওপারে। জাতির পিতার নামে প্রথম শিশু কিশোর সংগঠনটি যখন প্রতিষ্ঠা করি ১৯৯০ সালের ৩রা আগষ্ট, তখন সংগঠনের শাখা সংখ্যা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রথম যে জেলা সফর করি সেই জেলাটি হচ্ছে সিলেট জেলা। ১৯৯১ সালে সিলেটে সংগঠন করার জন্য প্রথম উদ্যোগ নেন আবদুল লতিফ নতুন।তখন মোবাইলের যুগ ছিলনা। চিঠিই একমাত্র ভরসা। তিনি আমাকে সিলেট যাবার জন্য আমন্ত্রণ জানান। আমি সিলেট যেদিন পৌঁছি পরদিন সকাল ১১টায় ছিল বদরুদ্দিন কামরানের ছড়ার পাড়ের বাসায় মিটিং। নতুনসহ আরো বেশ ক’জন(এ মূহুর্তে অনেকের নাম মনে নেই) কামরান ভাইয়ের সাথে বৈঠকে বসি। দীর্ঘ্ আলোচনা শেষে সিলেট জেলা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কামরান ভাই আবদুল লতিফ নতুনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী দিলেন। সেই থেকে শুরু হয় সিলেটে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কার্য্ক্রম। ঐসময় সিলেটের ছাত্র রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন আবদুল লতিফ নতুন। আমি তাকে অনুরোধ করি, আপনি ছাত্র রাজনীতির চেয়েও বেশী সময় দিবেন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলায়। তিনি আমার কথা রক্ষা করেছেন বলেই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সিলেটের আজকের এই অবস্থান। তিনি গোড়া শক্ত করে শিকড় গেড়েছেন শাহ জালাল ও শাহ পরানের পূণ্যভূমি সিলেটের মাটিতে। তাই সিলেটের মাটিতে শক্ত ঘাটি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার। আর এই সব কিছুর পিছনে কামরান ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে অগ্রগণ্য। তিনি প্রথম প্রথম আপনি করে বলতেন আমাকে। ঘনিষ্টতার পারদ যত বাড়তে থাকে আপনি ছেড়ে তুমিতে আসলেন কামরান ভাই। বুঝে নিন তিনি আমাকে কত ভালো বাসতেন।সিলেটে যতবার গেছি ততবার সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁর সাথে প্রথম বৈঠকের কোন ছবি নেই। সিলেটের বেশ কিছু অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম, যেখানে কামরান ভাইও ছিলেন। কিন্তু ওসব স্মৃতিও আমার কাছে নেই। ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে আমি আবার সাংগঠনিক সফর শুরু করি । তারই অংশ হিসেবে সিলেট সফর যাই। তখন তিনি ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। আমার সেই সফরের মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয় তাঁর সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে। সেখানে সিলেটের মেলার নেতা আবুদল লতিফ, আসাদুজ্জামান আসাদসহ সিলেট জেলা ও মহানগরের অনেক নেতাই উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ ঢাকায় ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় আমন্ত্রণে ঢাকার ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর প্রাঙ্গনে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কী প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলতেন, বক্তব্য রাখতেন। এই রকম একজন অভিভাবকের অভাব কখনো পূর্ণ্ হবার নয়। আমি তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।