যুক্তরাষ্ট্রে করোনা তাণ্ডবের কারণ জানালেন ড. ফাউসি

প্রকাশিত: ৫:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা তাণ্ডবের কারণ জানালেন ড. ফাউসি

অনলাইন ডেস্ক :;

যুক্তরাষ্ট্রে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না মহামারী করোনাভাইরাস। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা তাণ্ডবে দেশটিতে ৬০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু কিছুটা কমে এলেও তা আশাব্যঞ্জক নয়। এমতাবস্থায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ মহামারীতে আক্রান্ত ও প্রাণহানি বেশি হওয়ার কারণ জানিয়েছেন দেশটির করোনাবিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফাউসি।

স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পুরোপুরি শাটডাউন না করা আর বিধিনিষেধ শিথিলে তাড়াহুড়ার কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে ফের ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।

কোভিড-১৯ নির্মূলে হোয়াইট হাউসের টাস্কফোর্সের দেয়া নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলারও তাগিদ দেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমতাবস্থায় করোনা থেকে বেঁচে থাকার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন ফাউসি। শারীরিক দূরত্ব, মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলা এবং হাত ধোয়ার মতো মৌলিক সুরক্ষার বিষয়গুলো মেনে চলার ওপর জোর দেন তিনি।

প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসের ফের ঊর্ধ্বগতিতে দৃঢ় সতর্কবার্তা জানিয়েছেন ফাউসি।

হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞরা ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিলের যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যকে আগেও তা অনুসরণ করতে বলেছিলেন তিনি।

‘আমরা পুরোপুরি শাটডাউন করতে পারিনি, এ কারণেই আমাদের সংক্রমণের হার আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা নামতে শুরু করেছিল, কিন্তু যখন (গ্রাফ) খানিকটা সমতল ছিল, তখনও এ সংখ্যা তুলনামূলক বেশিই ছিল, দিনে প্রায় ২০ হাজারের মতো আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছিল।

এ কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দেয়।

‘এর পরই আমরা বিধিনিষেধ শিথিল করে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখতে শুরু করি, যার ধারাবাহিকতায় আমরা এখন ক্যালিফোর্নিয়া, আরিজোনা, টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ আরও কিছু রাজ্যের অবস্থা দেখছি,’ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ফাউসি।

মার্কিন করোনাভাইরাসবিষয়ক টাস্কফোর্সের নির্দেশনায় থাকা শর্তপূরণ হওয়ার আগেই অনেক রাজ্য অর্থনীতি ফের সচলে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে।

‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি (তাড়াহুড়া করে খুলে দেয়া) আমাদের জন্য ভালো হয়নি,’ বিভিন্ন রাজ্যের পানশালাগুলোতে তুমুল ভিড় ও নির্দেশনা অনুযায়ী মাস্ক না পরার বিষয়ে ইঙ্গিত করে বলেন ফাউসি।

নির্দেশনা অনুযায়ী চললে যুক্তরাষ্ট্র যে এখনও প্রাণঘাতী এ ভাইরাস মোকাবেলায় সক্ষম হবে, তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই এ সংক্রামক বিশেষজ্ঞের।

‘যদি আমরা পিছিয়ে যাই, ফের শাটডাউন করার দরকার নেই, কেবল খানিকটা পিছিয়ে আসতে হবে আর তার পর বিচক্ষণতার সঙ্গে নির্দেশনাগুলো দেখে ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে,’ বলেছেন তিনি।

রয়টার্সের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে প্রায় ৪০টিতে সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্যগুলোর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, আরিজোনা ও টেক্সাস যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ