সিলেট ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০
অনলাইন ডেস্ক :
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে (৩৩) খুনের ঘটনায় ২১ বছরের তরুণ টাইরিস হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর খুনি সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। ফাহিমকে হত্যার দুই দিন পর তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বেলুন কিনেছে ঘাতক। তার বান্ধবীর ২২তম জন্মদিন উদযাপনের জন্য ২২ লেখা দুটি বেলুন কিনে সে।
ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিটের প্রায় এক মাইলের কম দূরত্বের ক্রসবি স্ট্রিটের একটি অ্যাপার্টমেন্টের সামনে তিনি বেলুন ধরে আছেন। তার সঙ্গে এক নারীকেও দেখা গেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা নিউইয়র্ক পোস্টের কাছে এই খুনিকে ‘আমেরিকার নতুন সাইকো’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ফাহিম সালেহকে হত্যার পরও তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছিলেন হ্যাসপিল। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে উবার পরিবহনের ভাড়া মিটিয়েছেন হোম ডিপোট নামের দোকানে ইলেকট্রিক করাত কেনার জন্য যাওয়া–আসার সময়। ক্রেডিট কার্ডের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং ১৭ জুলাই সকালে ক্রসবি স্ট্রিটের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
১৭ জুলাই মধ্যরাতে ম্যানহাটনের ক্রিমিনাল কোর্টে হাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ সময় প্রসিকিউটররা জানান, ইতিমধ্যে খুনিকে দোষী প্রমাণের জন্য ‘পর্যাপ্ত আলামত’ পাওয়া গেছে। নজরদারি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ দেখে এসব আলামত শনাক্ত করা হয়েছে।
ম্যানহাটনের অ্যাসিসট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড বলেন, ভিডিওতে হ্যাসপিলকে একটি হোম ডিপো থেকে করাত ও পরিষ্কার করার উপকরণ কিনতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে সে উপকরণগুলোই সংগ্রহ করা হয়েছে। নজরদারি ক্যামেরা ফুটেজে হত্যাকারীর গায়ে যেমন পোশাক ছিল সে রকম পোশাক হাসপিলের ব্রুকলিনের বাড়িতে পাওয়া গেছে। এছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতিতেও ঘটনাস্থলেও তার উপস্থিতি শনাক্ত করতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
লিন্ডা ফোর্ড বলেন, ‘এ মামলার ক্ষেত্রে বিস্তর প্রমাণ রয়েছে। অপরাধ সংঘটনের আগে ও পরে তাকে নজরদারি ক্যামেরায় দেখা গেছে। ভিডিও টেপ দেখে অন্তত দুইজন ব্যক্তি তাকে শনাক্ত করতে পেরেছে।’
ফোর্ড আরও অভিযোগ করেন, ১৩ জুলাই দুপুর প্রায় পৌনে দুইটার দিকে লিফটে করে ফাহিমের পিছু নেয় মাস্ক পরা হ্যাসপিল। লিফটটি ফাহিমের ফ্ল্যাটে পৌঁছানোর পর পরই তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং তার ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর মরদেহ অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে রেখে সেখান থেকে চলে যায় হ্যাসপিল। পরদিন হোম ডিপো থেকে করাত ও অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে আবারও ওই অ্যাপার্টমেন্টে যায় সে।
সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাহিমের মরদেহ টুকরো করা শেষে সেগুলো ব্যাগে ভরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল হ্যাসপিলের। তবে তার আগেই ফাহিমের খালাতো বোন এসে কলিংবেল চাপতে থাকলে ভয়ে সিঁড়ি দিয়ে পালিয়ে যায় সে।
বিচারক জোনাথন সভেটকি জামিনের সুবিধা ছাড়াই হ্যাসপিলকে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মাত্রার খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। নিউইয়র্কের আইনে প্রথম মাত্রা বা দ্বিতীয় মাত্রার হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ দণ্ড সমান। আদালতে অপরাধ প্রমাণিত হলে, সর্বনিম্ন ১৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডে প্যারোল বা প্যারোলবিহীন দণ্ড আরোপ করা হতে পারে।
ফাহিম সালেহর হত্যাকাণ্ডে টাইরেস হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করা হলেও হ্যাসপিল মুখ খুলছেন না বলে জানা গেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরো মামলার তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। এর মধ্যে হ্যাসপিলের আইনজীবীর ইঙ্গিতপূর্ণ বিবৃতি অনেককেই জিজ্ঞাসু করে তুলেছে। আগামী ১৭ আগস্ট হ্যাসপিলকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।
ফাহিমের কাছ থেকে আগে ৯০ হাজার ডলার চুরি করেছিল হ্যাসপিল। ফাহিম তখন তাকে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করেছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। বরং হ্যাসপিল যেন কিস্তিতে টাকাটা ফেরত দিতে পারে, তার পথ বাতলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
এর আগে ১৪ জুলাই বিকালে নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটানে নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিম সালেহর খণ্ড খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট ও নিউইয়র্ক টাইমস
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নাজমুল কবীর পাভেল
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জুমা কবীর মিম
সহ সম্পাদকঃ আরিফ মাহবুব
নির্বাহী সম্পাদকঃ ধ্রুব জ্যোতি দে
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মাহমুদা আক্তার বিউটি
আইটি সম্পাদক : মাসুম আহমদ
উপদেষ্টা সম্পাদক : এ্যাডভোকেট জাহানারা বেগম
ইমেইল: sylnewsbd@gmail.com, pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Syl News BD
মোবাইলঃ 01712-540420
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি