পরিচয় গোপন করে হার্ভার্ডে পড়তে যান চীনের প্রেসিডেন্টের মেয়ে

প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০

পরিচয় গোপন করে হার্ভার্ডে পড়তে যান চীনের প্রেসিডেন্টের মেয়ে

সিল-নিউজ-বিডি ডেস্ক :: চীনের প্রেসিডেন্টের একমাত্র মেয়ের নাম জিয়াও মুজি। তার দাদা নাকি আদর করে এ নামটি রেখেছিলেন।

এ ছাড়া কূটনৈতিক নিরাপত্তার কারণে ছদ্মনামের আড়ালে মাঝে মাঝে গোপন থেকেছে তার পোশাকি পরিচয়। জীবনযাপনে ইভাংকা ট্রাম্পের বিপরীত মেরুতে থাকা জি মিংজে প্রচারের আলোয় কার্যত আসতেই চান না।

বাইরের দুনিয়া প্রায় জানেই না চীনের প্রেসিডেন্টের একমাত্র মেয়ের নাম। খবর আনন্দবাজারের।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং তার লোকসংগীত শিল্পী স্ত্রী পেং লিউয়াস দম্পতির মেয়ে জির জন্ম ১৯৯২ সালের ২৭ জুন। ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরের পড়াশোনা শেষ করে ২০১০ সালে জি পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য।

কিন্তু তিনি যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, সে খবর অন্তত দুই বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে প্রকাশিত হয়নি। চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে ছদ্মনাম ও পরিচয়ে জি সেখানে পড়াশোনা করেন মনস্তত্ব ও ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে।

জি যে সময় হার্ভার্ডে যান, তখনও তার বাবা চীনের প্রেসিডেন্ট হননি। কিন্তু জির দাদা জি ঝোংজুন ছিলেন দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা।

মাও সেতুংয়ের শাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন জি ঝোংজুন। ফলে প্রথম থেকেই হার্ভার্ডে চরম গোপনীয়তা পালন করতে হয়েছে জিকে।

সবসময়ই তাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করত বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীর বাহিনী। বাইরে সাধারণ ছাত্রীর পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস করলেও নির্দেশ মতো বেশি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তিনি বন্ধুত্ব করতে পারেননি।

অবসর সময়ে জি ভালোবাসেন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বই পড়তে। ফ্যাশনেও আগ্রহ আছে তার।

নব্বইয়ের দশকে জির শৈশবের কিছু ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। তার পর তিনি চলে যান গোপনীয়তার অন্তরালে। সংবাদমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া– কোথাও ছিলেন না তিনি।

এখনও তাকে প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা যায় না। এ কারণেই তার সম্পর্কে তথ্য বা তার ছবি, দুই-ই বিরল।

তাকে প্রথম প্রকাশ্যে স্বপরিচয়ে দেখা যায় ২০১৩ সালে। তার বাবা চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর। বাবা ও মায়ের সঙ্গে তিনি দেশবাসীকে বসন্তোৎসব এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

চীনের ইউনান প্রদেশের লিয়াংজিয়াহে গ্রামেও গিয়েছিলেন জি। এই গ্রামেই তার বাবা শি জিনপিং ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কাটিয়েছিলেন। সেই সময় দল থেকে দূরে সরে তাকে সমাজসেবামূলক কাজ করতে হয়েছিল।

চীনের সংবাদমাধ্যমে জি সম্পর্কে যেটুকু বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে তাকে সরল ও মার্জিত তরুণী বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

ছোট থেকেই সামাজিক কাজে জির আগ্রহ বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তার মা পেং। ২০০৮ সালে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল চীনের সিচুয়ান প্রদেশে। সেই সময় ষোড়শী জি স্কুলে আবেদন করেছিলেন ছুটির জন্য। যাতে তিনি সিচুয়ানে গিয়ে উদ্ধারকাজে শামিল হতে পারেন।

জির ওই উদ্যোগে পূর্ণ সম্মতি ছিল তার বাবা-মায়ের। পেং পরে জানিয়েছিলেন, সিচুয়ানের অভিজ্ঞতা তার মেয়েকে জীবনসংগ্রামের পথে তৈরি হতে সাহায্য করেছিল।

ইতিমধ্যে জিকে তার বাবার উত্তরসূরি বলা হচ্ছে। শোনা যায়, পারিবারিক ধারা মেনে তিনিও রাজনীতিতে পা রাখবেন। কিন্তু বেশ কিছু মার্কিন ও তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যমে আবার উল্টো সুরও শোনা যায়।

সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জি নাকি চীনের জীবন থেকে বেশি পছন্দ করেন মার্কিন শহর ম্যাসাচুসেটসে কাটানো দিনগুলো। মেয়ের ইচ্ছের কাছে হার মেনে চীনের প্রেসিডেন্ট নাকি তাকে আবার আমেরিকায় ফিরে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কোনো দিন চীনের বাইরে গিয়ে থাকেননি। তার পড়াশোনার পর্বও সম্পূর্ণ কেটেছে নিজের জন্মভূমিতেই। অথচ তার দুই পূর্বসূরি নেতা জিয়াং জেমিন (চীনের প্রেসিডেন্ট পদে ১৯৯৩-২০০৩) এবং ডেং জিয়াওপিং দুজনেই সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ায় গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। জিয়াওপিং কয়েক বছর কাটিয়েছেন ফ্রান্সেও।

শোনা যায়, এ কারণে নাকি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে জিনপিংয়ের বিবাহবিচ্ছেদ অবধি হয়ে গিয়েছিল। কারণ তার প্রথম স্ত্রী কে লিংলিং চীন ছেড়ে ব্রিটেনে গিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন।

লিংলিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের দাম্পত্য শেষ হয়ে যায় ১৯৮২ সালে। তার পাঁচ বছর পর পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন শি জিনপিং।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
18192021222324
252627282930 
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ