ব্যভিচার প্রতিরোধে বিয়ে

প্রকাশিত: ১:১২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০

ব্যভিচার প্রতিরোধে বিয়ে

মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী :; ইসলাম ফিতরাত তথা স্বভাজজাত ধর্ম। স্বভাবজাত ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গের নাম বিয়ে। এটি মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন। অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। এর দ্বারা গুনাহ ও পাপাচার থেকে নিজেকে সংবরণ করার মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়ের ইমান, ইসলাম ও সতীত্ব রক্ষা পেতে পারে। যদি মানুষ বিয়ে থেকে পলায়ন করে, বৈধ ও ধর্মীয় মতে নিজের চাহিদা না মেটায়, তখন সে অবৈধ ও অভদ্র পদ্ধতিতে সে চাহিদা পুরা করে; যার ফলে সব রকমের মন্দ ও নির্লজ্জ কাজে জড়িয়ে পড়ে। এতে পৃথিবীতে বহুরকমের ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে শান্তি লাভ কর এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর ভিতর নিদর্শন আছে সেসব লোকের জন্য, যারা চিন্তাভাবনা করে।’ সুরা রুম, আয়াত ২১। বিয়ে যে কোনো বয়সে করা যায়। বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই ইসলামে। উন্নতি আর অগ্রগতির নামে দেরিতে বিয়ে হলে অনেক সময় উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হয়ে যায়। ছেলেমেয়ে অনেক রকম পাপাচারে জড়িত হয়ে পড়ে। অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সতর্কতা কাম্য। অবশ্য ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত একটি হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর (যত তাড়াতাড়ি পারা যায়) সন্তানাদিকে বিয়ে করিয়ে দাও। পিতা যদি বিয়ে না করায় ফলে সন্তান কোনো অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যায় তখন ত্রুটির কারণে পিতাও গুনাহগার হবে।’ মিশকাত।

মেয়েরা কত বছরে প্রাপ্তবয়স্ক হয় এ ব্যাপারে ফতোয়ার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ রদ্দুল মুহতারের ভাষ্য হলো- ‘মেয়েদের যখন মাসিক হয়, স্বপ্নদোষ হয় কিংবা গর্ভবতী হয় তখন শরিয়তের দৃষ্টিতে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক ধরা হবে। তাদের প্রাপ্তবয়স্ক ধরার জন্য বয়স ধর্তব্য হবে না। অবশ্য মেয়ের বয়স ১৫ বছর হয়ে গেলে তখন তাকে সর্বাবস্থায় প্রাপ্তবয়স্কা ধরা হবে। যদিও কোনো কিছুই তাদের থেকে প্রকাশ না পায়।’ রদ্দুল মুহতার। স্বামী-স্ত্রীর বয়সের সমতা রক্ষা করা আবশ্যক। যেমন হজরত ফাতিমা (রা.)-এর বিয়ে হজরত আলী (রা.)-এর সঙ্গে হয়েছিল। বিয়ের সময় হজরত ফাতিমার বয়স ছিল সাড়ে ১৫ বছর। হজরত আলীর বয়স ছিল ২১ বছর। এর থেকে জানা যায়, বর-কনের বয়সের সমতা ঠিক রাখা উচিত। উত্তম হলো স্বামী স্ত্রী থেকে একটু বড় হবে। জ্ঞানীরা বলেন, মেয়ে যদি একটু ছোট হয় তাহলে সমস্যা নেই। ব্যভিচার হারাম ইসলামে। বহু অন্যায় কাজের দ্বার খুলে দেয় এটি। এজন্য এর কাছে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে আল কোরআনে। আল্লাহ বলেন, ‘আর ব্যভিচারের কাছেও যেও না, নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল ও মন্দ কাজ যা আরও অন্যায় কাজের পথপ্রদর্শক।’ সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৩২।
মারাত্মক ধরনের লজ্জাকর বিষয়ও এটি। ব্যভিচারী নারী-পুরুষের সমাজে সম্মান বলতে কিছু থাকে না। ভাবমূর্তি নষ্ট হয় চরমভাবে। আল্লাহ বলেন, ‘বলুন আমার পালনকর্তা নিশ্চিতভাবে ওইসব কাজ হারাম করেছেন যা অশ্লীল ও লজ্জাকর তা প্রকাশ্য হোক কিংবা গোপন।’ সুরা আরাফ, আয়াত ৩৩।

বিয়ের মাধ্যমে ব্যভিচার হ্রাস করা সম্ভব।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।
সুত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সংবাদ অনুসন্ধান ক্যালেন্ডার

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
1234567
15161718192021
293031    
       
22232425262728
2930     
       
  12345
2728     
       
28      
       
       
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       

আমাদের ফেইসবুক পেইজ